Amit Shah

মোদী ও শাহের পাশেই বেশির ভাগ বিরোধী

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, কোথাও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চাপ, কোথাও বা পারিতোষিক ব্যবহার করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ ০৩:৫৭
Share:

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (বাঁ দিকে) সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র

বেহাল অর্থনীতি, অতিমারি, চিনের আগ্রাসন। সব মিলিয়ে নিঃসন্দেহে চাপের মধ্যে মোদী সরকার। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি দল ছাড়া, বেশির ভাগ বিরোধীকেই নিজেদের তাঁবে নিয়ে আসতে পেরেছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ— এমনটাই ঘরোয়া শিবিরে দাবি করছে বিজেপি।

Advertisement

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, কোথাও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চাপ, কোথাও বা পারিতোষিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এক-এক দলের ক্ষেত্রে এক-এক মন্ত্র। নিট ফল, লোকসভার পাশাপাশি রাজ্যসভাতেও যাবতীয় বিল পাশে অগাধ সমর্থন জোগাড় করে নিয়েছে শাসক দল। পাশাপাশি চিনের সঙ্গে সংঘাতের প্রশ্নে এনডিএ-র শরিকদের পাশাপাশি, অধিকাংশ বিরোধী দলের সমর্থন মোদীর সঙ্গেই।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই উত্তরপ্রদেশে ছত্রভঙ্গ বুয়া-বাবুয়া অর্থাৎ মায়াবতী-অখিলেশ জোট। সমাজবাদী পার্টি এখনও প্রকাশ্যে মোদীকে সমর্থন করেনি ঠিকই, কিন্তু যৌথ বিরোধী কর্মসূচির প্রশ্নে তাদের নরম পন্থা নিতেই দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, অখিলেশ নাকি মোদী-বিরোধিতার কোনও একটি কর্মসূচিতে সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি দুঃখিত। তাঁদের সহযোগিতা যেন আপাতত না-চাওয়া হয়।

Advertisement

বিএসপি নেত্রী মায়াবতী প্রকাশ্যেই চিন-প্রশ্নে মোদীর পাশে দাঁড়িয়ে বিবৃতি দিয়েছেন এবং বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার সঙ্গে। মায়াবতী এখন আক্রমণের মুখ ঘুরিয়েছেন কংগ্রেসের দিকে। তাঁর আজকের বক্তব্য, “ভারত-চিন সীমান্ত সঙ্কট নিয়ে বিজেপির পাশে রয়েছে বিএসপি। কংগ্রেস এবং বিজেপি দেশের নিরাপত্তা নিয়ে রাজনীতি করেছে। সেটা দেশের জন্য ভাল নয়।” এর আগে যখন চিনা সেনার ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকা নিয়ে মোদীর মন্তব্যে হইচই পড়ে, তখনও মায়া বলেছিলেন, তাঁর দল প্রধানমন্ত্রীর পাশে রয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠা প্রিয়ঙ্কা তখন কারও নাম না করে বলেন, বিরোধীদের কেউ কেউ বিজেপি-র মুখপাত্র হয়ে উঠেছে! মায়াবতী আজ নিজেই বিষয়টিকে নিজের দিকে টেনে বলেছেন, তিনি বিজেপির মুখপাত্র নন। জবাবে প্রিয়ঙ্কার বক্তব্য, “আগেই বলেছিলাম প্রতিপক্ষের কিছু নেতা বিজেপির মুখপাত্র হয়েছেন।” তবে রাজনীতির লোকজনের মতে, বিরোধীদের এই ভাবে মোদীর পিছনে দাঁড়ানোটা আসলে কংগ্রেসের ব্যর্থতাই তুলে ধরছে। এমনকি ইউপিএ-র অন্যতম শরিক শরদ পওয়ারকেও বেসুরে বাজতে দেখা যাচ্ছে।

মোদীর আগের ইনিংসের মতো এ বারেও বিজেডিকে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে। চিন নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে বিজেডির সংসদীয় নেতা পিনাকী মিশ্র মোদীর পক্ষে নিঃশর্ত সমর্থনের কথা বলেছেন বলে জানা গিয়েছে। জগন্মোহন রেড্ডি, কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের মতো মুখ্যমন্ত্রীরা জানান, তাঁরা মোদীর সঙ্গে রয়েছেন। একই ভাবে দ্বিতীয় বার জিতে আসার পর আপ-ও মোদী-শাহের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলছে।

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, নানা কৌশল নিয়েছে বিজেপি বিরোধীদের মুখ ঘোরানোর জন্য। মায়াবতী বা জগনের মতো নেতাদের বিরুদ্ধে পুরনো-নতুন সিবিআই মামলাকে খুঁচিয়ে তোলার চাপ রয়েছে। এক বিরোধী নেতার কথায়, ‘অমিত শাহ শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নন। তিনি জেগে থাকার পুরো সময়টাই এক রাজনৈতিক নেতা। বিরোধী দলকে কী ভাবে ভাঙতে হয় ভাল করে জানেন। বিরোধীদের এ কদিকে চাপ দিয়ে অন্য দিকে ব্যাক চ্যানেল কথা বলার রাস্তায় চলছেন বিজেপি নেতৃত্ব।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন