উত্তরপ্রদেশে ভোটের প্রচারে অখিলেশ যাদবকে কটাক্ষ করে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘যে বাবার আপন হতে পারল না সে অন্যদের আপন হবে কী করে?’’ আজ প্রায় সেই মন্তব্যের জের টেনেই অখিলেশকে বিঁধলেন খোদ তাঁর বাবা মুলায়ম। দাবি করলেন, অখিলেশের চেয়ে বেশি অপমান তাঁকে করেননি।
নিজের এক সময়ের নির্বাচনী কেন্দ্র মইনপুরিতে আজ একটি হোটেলের উদ্বোধন করতে যান মুলায়ম। সেখানেই অখিলেশকে আক্রমণ করেন মুলায়ম। মুলায়মের কথায়, ‘‘ভারতে একমাত্র আমি ছাড়া আর কোনও রাজনীতিক ছেলেকে মুখ্যমন্ত্রী করেননি। কিন্তু অখিলেশই আমাকে সবচেয়ে বেশি অপমান করেছে।’’ মোদীর মন্তব্যের জের টেনে মুলায়ম বলেন, ‘‘কথাটা ঠিকই। যে ছেলে বাবার আপন হতে পারে না তাকে মানুষ শ্রদ্ধা করবে কেন?’’
মুলায়মের দাবি, মোদীর ওই মন্তব্য ভোটারদের উপরে প্রভাব ফেলেছিল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তখন আমি মুখ খুলিনি। কারণ, আমার ছেলেই আমার বিরোধিতা করছিল।’’ কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা নিয়েও ছেলেকে এক হাত নিয়েছেন মুলায়ম। তাঁর দাবি, ‘‘যে দল আমাকে তিন বার খুন করার চেষ্টা করেছিল তাদের সঙ্গে আমার ছেলে হাত মেলাল। এটা দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কিছু নয়।’’ এটি নিয়েও নির্বাচনী প্রচারে সমাজবাদী পার্টিকে ঠুকেছিলেন মোদী।
আরও পড়ুন: হিন্দুত্বেরই রথ টানছে তাঁদের উন্নয়ন যজ্ঞ
হঠাৎ কেন ছেলের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠলেন মুলায়ম?
রাজনীতিকদের মতে, মোটেই হঠাৎ নয়। উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকারের শপথের পর থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর পথ নিয়েছেন মুলায়ম। গত কালই লখনউয়ে এক গোশালায় হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেই গোশালার পরিচালক অখিলেশের সৎ ভাই প্রতীক ও তাঁর স্ত্রী অপর্ণা। সমাজবাদী পরিবারের মুষলপর্বে প্রতীক-অপর্ণা অখিলেশের বিরুদ্ধে ছিলেন বলেই দলীয় সূত্রে খবর। অপর্ণা ও আদিত্যনাথ দু’জনেই আবার আদতে উত্তরাখণ্ডের পাউরির বাসিন্দা। ফলে মুলায়মের আশীর্বাদেই অপর্ণা বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
মুলায়ম শিবির সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের একাধিক মামলা নিয়ে ফের নাড়াচাড়া শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন মুলায়ম। ফলে কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পর্ক মোটের উপরে ভালোই রাখতে চাইছেন তিনি। এক সমাজবাদী নেতার কথায়, ‘‘অখিলেশ কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বজায় রাখতে পেরেছেন। কিন্তু পরিবারের ফাটল আবার প্রকট হয়ে উঠছে।’’