মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টের চাবাড হাউস তখন জঙ্গিদের দখলে। দু’বছরের শিশুটির কান্না শুনতে পেয়ে প্রাণ হাতে করে বাড়িটিতে ঢুকে পড়েছিলেন স্যান্ড্রা স্যামুয়েল। সাহসী ভারতীয় ন্যানির জন্যই সে যাত্রা রক্ষা পায় ছোট্ট মোশে হোলৎসবার্গ। যদিও ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর, মুম্বই হামলায় বাবা-মাকে হারায় সে।
তার পরে কেটে গিয়েছে ন’টা বছর। ইজরায়েলে দাদু-ঠাকুমার সঙ্গে থাকে মোশে। স্যান্ড্রাকে সাহাসিকতার পুরস্কার হিসেবে বিশেষ নাগরিকত্ব দিয়েছিল ইজরায়েল সরকার। মোশের দেখাশোনার ভার নিয়ে তিনি-ও চলে যান বিদেশে। গত জুলাইয়ে নরেন্দ্র মোদীর ইজরায়েল সফরে মোশে দেখা করেছিল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। জানায়, মা-বাবা যেখানে থাকতেন, সেই দেশটায় যেতে চায় সে। মোদীও তৎক্ষণাৎ বলেছিলেন, ‘‘এ দেশে এসো এবং থেকে যাও। তোমাকে দীর্ঘদিনের ভিসা দেওয়া হবে, যাতে যখন ইচ্ছে ভারতে আসতে পার।’’
এর পরেই অগস্টে ১০ বছরের জন্য ‘মাল্টিপল ভিসা’ দেওয়া হয়েছে মোশেকে। বাবা-মা, গ্যাব্রিয়েল ও রিবকার ন’বছরের মৃত্যুবার্ষিকীতে মোশে ফের জানাল, সে ভারতে আসতে চায়। রবিবার দাদু-ঠাকুমার সঙ্গে জেরুজালেমের মাউন্ট অলিভ কবরস্থানে গিয়ে ২৬/১১-র মুম্বই হামলায় নিহতদের জন্য প্রার্থনা করেছে সে। ওই কবরস্থানেই সমাহিত করা হয়েছিল গ্যাব্রিয়েল ও রিবকাকে।
মোশে এখন এগারো। দাদু রাব্বি শিমোন রোজেনবার্গ জানিয়েছেন, খুদের তেরো বছর বয়স হলে তাঁর ‘বার মিৎস্ভা’ (ইহুদি অনুষ্ঠান, অনেকটা উপনয়নের মতো) উপলক্ষে মুম্বইয়ে যাবেন তাঁরা। দাদু বলেন, ‘‘ওর মুম্বইয়ের প্রতি একটা টান রয়েছে। আমরাও চাই মা-বাবা যেখানে কাজ করতেন, ও সেই জায়গাটা ঘুরে দেখুক।’’ মোশে বলেছে, ‘‘যখন আমি বুড়ো হয়ে যাব, ভারতেই থাকব। চাবাড হাউসের ডিরেক্টর হবো।’’
আগামী বছর ভারত সফরে আসার কথা ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর। দাদু-ঠাকুমার সঙ্গে মোশেও হয়তো আসবে জানুয়ারির ওই সফরে।