সুহানা সইদ। ছবি: ফেসবুক।
রিয়্যালিটি শোয়ে গিয়ে হিন্দু ভক্তিগীতি গাওয়ায় মুসলিম তরুণীকে তুমুল গালিগালাজ করা হল ফেসবুকে। মুসলিম হয়ে কেন হিন্দু ধর্মের গান গাইলেন সুহানা সইদ এবং কোন অধিকারে অচেনা পুরুষদের সামনে গিয়ে গান গাইলেন— লম্বা এক ফেসবুক পোস্টে সেই প্রশ্নই তোলা হয়েছে। সুহানা তো বটেই, তাঁর মা-বাবাও আর স্বর্গে যেতে পারবেন না, এমন মন্তব্যও করা হয়েছে। ঘটনাটি কর্নাটকের।
যে ফেসবুক পেজটিতে সুহানা সইদকে আক্রমণ করা হয়েছে, সেটির নাম ‘ম্যাঙ্গালোর মুসলিমস’। পেজটির প্রায় ৪৬ হাজার ফলোয়ার রয়েছেন। একটি জনপ্রিয় কন্নড় চ্যানেলের রিয়্যালিটি শো’য়ে গিয়ে সুহানা ভক্তিগীতিটি গেয়েছিলেন। বিচারকরা মুগ্ধ হন তাঁর গানে। সুহানা সইদের গলায় হিন্দু ভক্তিগীতি সমস্ত বিভেদ মুছে দিয়েছে, এমন মন্তব্যও করেন বিচারকরা। সুহানার গান এবং বিচারকদের প্রশংসা— এই গোটা পর্বটি এত জনপ্রিয় হয়েছিল যে ভিডিওটি গোটা কর্ণাটকেই ভাইরাল হয়।
আরও পড়ুন: কেন দেরি হচ্ছে? যাত্রীদের মিথ্যে বললেন পাইলট!
কট্টরবাদীদের কিন্তু এই বিষয়টি একেবারেই পছন্দ হয়নি। ম্যাঙ্গালোর মুসলিমস নামের পেজটিতে দীর্ঘ পোস্ট করে ২২ বছরের তরুণীকে ইসলাম বিরোধী কাজের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হওয়ায় পোস্টটি পরে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। সেই পোস্টে সুহানার উদ্দেশে কন্নড় ভাষায় লেখা হয়েছিল, ‘‘তুমি মোটেই বিরাট কিছু করনি... তুমি যে ভাবে নিজেকে অন্য পুরুষদের সামনে মেলে ধরেছ, তাতে তোমার বাবা-মা আর স্বর্গে যেতে পারবেন না। হিজাব পরা বন্ধ করে দাও, কারণ তুমি জান না ওটিকে কী ভাবে সম্মান করতে হয়।’’
বিভিন্ন মহলে এই পোস্টের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। ২২ বছরের এক তরুণীর বিরুদ্ধে মৌলবাদীদের এই প্রবল বিদ্বেষের তীব্র নিন্দা শুরু হয়। তার পরই পোস্টটি ডিলিট করা হয়েছে এবং ম্যাঙ্গালোর মুসলিমসের তরফে ওই রকম কোনও পোস্টের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। নতুন একটি পোস্ট হয়েছে ফেসবুক পেজটিতে। সেখানে লেখা হয়েছে, কারও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে তাঁরা চান না। কিন্তু ইসলাম ধর্মাবলম্বী হয়েও যে ভাবে অন্য ধর্মের গান গেয়েছেন সুহানা, তার নিন্দায় ওই পেজটি এখনও মুখর।