উত্তাল সংসদ

গোমাংস-গুজবে গণপিটুনি দুই মহিলাকে

প্রকাশ্য স্টেশনেই দুই মহিলাকে বেধড়ক মারধর করছে এক দল লোক। স্লোগান উঠছে— গো-মাতার জয়! আর পাশে দাঁড়িয়ে দেখছে পুলিশ। কেউ কেউ পকেট থেকে মোবাইল বের করে ভিডিও-রেকর্ডও করছেন। তবে ওই মহিলাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসছেন না কেউ!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০৪:০৭
Share:

প্রকাশ্য স্টেশনেই দুই মহিলাকে বেধড়ক মারধর করছে এক দল লোক। স্লোগান উঠছে— গো-মাতার জয়! আর পাশে দাঁড়িয়ে দেখছে পুলিশ। কেউ কেউ পকেট থেকে মোবাইল বের করে ভিডিও-রেকর্ডও করছেন। তবে ওই মহিলাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসছেন না কেউ!

Advertisement

ওই মহিলাদের বিরুদ্ধে গোমাংস বিক্রির গুজব ছড়িয়েছিল। আর তার জেরেই গুজরাত-মহারাষ্ট্রের পর সংখ্যালঘু নির্যাতন চলল মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে! যা জনমানসে উস্কে দিয়ে গেল দাদরির স্মৃতি। পরে অবশ্য জানা গিয়েছে, গরু নয়, ওই মহিলাদের সঙ্গে ছিল ৩০ কিলোগ্রাম মোষের মাংস। আর তার জেরেই এমন ঘটনা। মঙ্গলবারের এই ঘটনা নিয়ে আজ এক দফা তোলপাড় হয়েছে সংসদও। কেন বার বার বিজেপি-শাসিত রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটছে? কেন এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রধানমন্ত্রী? এমন সব প্রশ্নে আরও এক বার বিড়ম্বনায় পড়তে হল নরেন্দ্র মোদী সরকরকে!

মধ্যপ্রদেশের পুলিশ বলছে, ওই মহিলারা গোমাংস বিক্রি করতে যাচ্ছেন বলে তাদের কাছে খবর পৌঁছেছিল। সেই সূত্র ধরে তাঁদের গ্রেফতার করতে স্টেশনে হাজির হয় পুলিশ। আর উত্তেজনা ছড়ায় সেখান থেকেই! মধ্যপ্রদেশে গোমাংসের বিকিকিনি নিষিদ্ধ। গুজব ছড়াতেই মারমুখী হয়ে ওঠে জনতা! হাত গুটিয়ে বসে পড়ে পুলিশও।

Advertisement

আজ রাজ্যসভায় এ নিয়ে সরাসরি সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভিকে নিশানা করেছেন মায়াবতী। বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রীর প্রশ্ন, ‘‘আপনার সম্প্রদায়ের মহিলাদের উপর আক্রমণ হয়েছে। আপনাকে এর জবাব দিতেই হবে। গো-রক্ষার নামে মহিলাদের মারধর করা লজ্জাজনক। কিছুতেই তা মেনে নেওয়া যায় না। বিজেপি এক দিকে বলছে, কন্যাসন্তান রক্ষা করুন। আর অন্য দিকে বিজেপি-শাসিত রাজ্যেই মহিলাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে!’’

কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা সরাসরি বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই। তাঁর কথায়, ‘‘উনি চায়ে-পে-চর্চা করছেন, মন কি বাত করছেন, কিন্তু এ সব নিয়ে মুখ খুলছেন না।’’ বহুজন সমাজ পার্টির সাংসদরা ওয়েলে নেমে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ‘দলিত-বিরোধী’ এবং ‘মহিলা-বিরোধী’ স্লোগান তোলেন। চাপের মুখে নকভি বলেন, ‘‘এই দেশ সংবিধান এবং আইনে চলে, লাঠিতে চলে না। রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’

নকভি দাবি করলেও গণপিটুনিতে অভিযুক্ত কাউকে পুলিশ রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি। নিয়মিত লুকিয়ে মোষের মাংস বিক্রির অভিযোগে আক্রান্তদেরই গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য তাঁরা জামিনও পান। পুলিশ গণপিটুনির ঘটনায় ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement