ছবি: সংগৃহীত।
অকালেই ঝরে গিয়েছিল মেয়ের জীবন। থেমে গিয়েছিল উড়ান। তবে ছেলের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। শীঘ্রই আকাশে ডানা মেলবেন তিনি। মায়ের দাবি, রাহুল গাঁধীর জন্যই ছেলের স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।
২০১২-র ডিসেম্বরের এক রাতেই বদলে গিয়েছিল জ্যোতি সিংহের জীবন। চলন্ত বাসের মধ্যে গণধর্ষণ। তার পর অকথ্য শারীরিক নির্যাতন। বাস থেকে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল নির্ভয়ার ক্ষতবিক্ষত দেহ। ১৩ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েও বেঁচে ফিরতে পারেননি প্যারামেডিক্যালের ওই ছাত্রী। সেই নির্ভয়ার ভাই এই আমন (নাম পরিবর্তিত)। দিদির স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে গেলেও আমন তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছেছেন। সিংহ পরিবারেরও স্বপ্নপূরণ হয়েছে। আমনের মা আশাদেবী বলেন, “রাহুল গাঁধীর জন্যই আমন এখন পাইলট।”
আশাদেবী জানিয়েছেন, ছেলেকে নিয়মিত ফোন করে উদ্দীপ্ত করতেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। সেই সঙ্গে ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্যই আর্থিক সাহায্যও করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন
হিন্দুরাও সন্ত্রাসবাদী হয়ে উঠছেন, দক্ষিণপন্থীরাই দায়ী: বিস্ফোরক হাসন
ভারত বিরোধী জঙ্গিদের নাম মার্কিন তালিকায়, আরও চাপ পাকিস্তানকে
মাত্র ৬৭ শব্দের চিঠিতে মুসলিমের দেশটা ইহুদির হয়ে গেল
জ্যোতির অকালমৃত্যুর সময় আমন দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া। ইচ্ছে ছিল, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার। কিন্তু, দিদির সঙ্গে যে অত্যাচার হয়েছে তা তাঁকে পুরোপুরি বিহ্বল করে দিয়েছিল। আশাদেবী বলেন, “রাহুল গাঁধীই ছেলেকে ফোন করে করে উদ্বুদ্ধ করেছেন। নিজের জীবনে ভাল কিছু করার জন্য। পরিবারের ভরসা হয়ে ওঠার জন্য। সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে জানতে পেরে রাহুলই বলেছিলেন, স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে পাইলট হওয়ার দিকে মন দিতে।”
রাহুলের পরামর্শ মেনেই ২০১৩-তে সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষার পর রায়বরেলীতে ইন্দিরা গাঁধী রাষ্ট্রীয় উড়ান অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হন আমন। আশাদেবী জানিয়েছেন, রায়বরেলীতে যাওয়ার পরও আমন সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিল। তবে পড়াশোনার চাপে সেই প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে পারেনি। ১৮ মাসের পাইলট ট্রেনিং কোর্সের সময়ই ‘নির্ভয়া’ গণধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। রায়বরেলী থেকেই সেই মামলার খোঁজখবর রাখতেন তিনি। আশাদেবী বলেন, “সে সময়ও রাহুল গাঁধী ফোন করে বলতেন, ‘হাল ছেড়ো না’। আমনের পড়া শেষ হওয়ার পরও তাঁকে ফোন করেছেন রাহুল। ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি তাঁর চাকরির বিষয়েও খোঁজ নিতেন তিনি।”
গুরুগ্রামে একটি বেসরকারি বিমান সংস্থায় ট্রেনি পাইলট হিসেবে কাজ করছেন আমন। শীঘ্রই বিমান চালানোর অনুমতি পাবেন। আশাদেবী জানিয়েছেন, রাহুল গাঁধীর পাশাপাশি এখন প্রিয়ঙ্কা বঢরাও আমনকে ফোন করেছেন। তিনি বলেন, “প্রিয়ঙ্কা প্রায়ই আমাদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে খোঁজখবর করেন।”