প্রতীকী ছবি।
অসমের তিনসুকিয়া জেলার হত্যাকাণ্ডের পর মায়ানমারের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গি দমনের ব্যবস্থা নিতে চলেছে ভারত। ইতিমধ্যেই কূটনৈতিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে নিজেদের কঠোর মনোভাব জানানো হয়েছে। সাউথ ব্লকের কাছে খবর, মায়নমারের উত্তরে সাগাইং এবং কাচিন জেলায় অন্তত ১৫টি জঙ্গি শিবির রয়েছে, যেখানে প্রায় দেড় হাজার জঙ্গি রয়েছে।
তার মধ্যে রয়েছে আলফা, এনএসসিএন (খাপলাং) ইউএনএলএফ এবং মণিপুরের কিছু জঙ্গি গোষ্ঠী। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান শুরু করতে সাউথ ব্লকের পক্ষে মায়ানমারের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ভারত-মায়ানমার ১৬৪৩ কিলোমিটারের খোলা সীমান্তে অবাধ যাতায়াতের সুযোগে নৈরাজ্যের স্বর্গোদ্যান গড়ে উঠছে। দু’দেশের চুক্তি অনুযায়ী দু’প্রান্তের ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ভিসাবিহীন আসা-যাওয়া করা যায়। সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৪ বছরে ভারত এবং মায়ানমারে বেআইনি অস্ত্র চোরাচালান যথেচ্ছ ভাবে বেড়েছে। ১৮০টি আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ওই একই সময়ে উদ্ধার
হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কিলোগ্রাম মাদক, ভারত-নেপাল সীমান্তে উদ্ধার হওয়া মাদকের পরেই যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, ভারতের এই জঙ্গি সংগঠনগুলি নানা উপায়ে অর্থ জোগাড় করে। মায়ানমারের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে যায় না এরা। মায়ানমারে উত্তর-পূর্ব ভারতের জঙ্গিদের এই বাড়বাড়ন্তের পিছনে বেজিং-এর একটা বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই সূত্রের দাবি, মায়ানমার সীমান্তে উত্তর-পূর্বের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে এক ছাতার নীচেয় আনার ক্ষেত্রে চিনা সেনার একাংশ সক্রিয়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর— আলফা, এনএসসিএন (খাপলাং) এবং আরও ৭টি জঙ্গি সংগঠনকে নিয়ে ‘ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’ তৈরির তৎপরতা চালাচ্ছে চিন।
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে চিনের সঙ্গে প্রথম বারের মতো যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক এবং চুক্তি হয়, সেখানে এই প্রসঙ্গগুলি বিশদে তুলে ধরেছিলেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা। চিন-মায়ানমার সীমান্তে আত্মগোপনকারী আলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াকে ভারতে ফিরিয়ে আনার দাবিও জানানো হয়েছিল। কিন্তু চিনের দিক থেকে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।