(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এখনই মুখোমুখি বৈঠক হচ্ছে না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ঘোষিত কোনও বৈঠক-সূচি ছিলও না। তবে দুই রাষ্ট্রনেতারই মালয়েশিয়া সফরে যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে দু’জন বৈঠক বসতে পারেন, এমন সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছিল। তবে অন্য ব্যস্ততার কারণে এখনই মালয়েশিয়ায় যেতে পারছেন না মোদী। ফলে ওই সফরকালে মোদী-ট্রাম্প মুখোমুখি সাক্ষাতের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তাতে নয়াদিল্লি জল ঢেলে দিল বলে মনে করছেন অনেকে।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালা লামপুরে চলতি মাসেই বৈঠকে বসছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির জোট ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন্স’ (আসিয়ান)। আগামী ২৬-২৮ অক্টোবর ওই সম্মেলন হওয়ার কথা। ভারত বা আমেরিকা— কেউই এই ১০ দেশীয় জোটের সদস্য নয়। তবে উভয়েই এই জোটের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যসঙ্গী। সেই কারণেই মালয়েশিয়ার বৈঠকে থাকবেন মোদী এবং ট্রাম্পও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, চিন, জাপান এবং রাশিয়াও যোগ দেবে ওই সম্মেলনে।
মোদী সশরীরে মালয়েশিয়ায় উপস্থিত থাকলে ‘আসিয়ান’ সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর আলোচনায় বসার সম্ভাবনা ছিল। তবে বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার ইব্রাহিম সমাজমাধ্যম পোস্টে জানালেন, গত রাতে মোদীর সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। সেই সময়েই মোদী তাঁকে জানিয়েছেন, ভারতে দীপাবলি উদ্যাপনের জন্য তিনি ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যোগ দেবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী মোদীও সমাজমাধ্যমে জানান, তিনি ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন ওই সম্মেলনে।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ নয়াদিল্লির আধিকারিক সূত্রে জানাচ্ছে, ছটপুজোর কারণেই ওই সম্মেলনে সশরীরে থাকছেন না মোদী। আগামী ২৮ অক্টোবর ছটপুজো রয়েছে। তার পরে আগামী ৬ এবং ১১ নভেম্বর বিহারের ভোট রয়েছে। বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে ছটপুজোর দিনে মোদীর কর্মসূচি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে, সম্ভবত সেই কারণেই মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন না মোদী।
বস্তুত, বাণিজ্য-শুল্ক ঘিরে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে এক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে গত কয়েক মাস ধরে। রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়েও ভারতের উপর অসন্তুষ্ট ট্রাম্প। ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছেন তিনি। দু’দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনার পরেও কোনও সমাধানসূত্র এখনও বেরিয়ে আসেনি। এরই মধ্যে ট্রাম্প গত সপ্তাহে দাবি করেছেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার বিষয়ে মোদী তাঁকে ফোনে আশ্বস্ত করেছেন। যদিও ভারত বুঝিয়ে দিয়েছে, ট্রাম্পের দাবি অসত্য। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, যে সময়ের কথা ট্রাম্প বলছেন, ওই সময়ে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কোনও কথাই হয়নি। এ অবস্থায় মোদী-ট্রাম্প মুখোমুখি বৈঠকে বসলে জটিলতা কাটার সম্ভাবনা ছিল বলেই মনে করছেন অনেকে।