মোদী-নওয়াজ বৈঠকের আশা

নিয়ন্ত্রণরেখা ঘিরে অশান্তি, কুলভূষণ যাদবকে ঘিরে দু’দেশের টানাপড়েনের মধ্যেই মুখোমুখি হতে পারেন নরেন্দ্র মোদী ও নওয়াজ শরিফ। আগামী মাসে কাজাখস্তানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠক চলাকালীন দুই নেতার বৈঠক হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ইসলামাবাদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৩:৪৩
Share:

নরেন্দ্র মোদী ও নওয়াজ শরিফ

নিয়ন্ত্রণরেখা ঘিরে অশান্তি, কুলভূষণ যাদবকে ঘিরে দু’দেশের টানাপড়েনের মধ্যেই মুখোমুখি হতে পারেন নরেন্দ্র মোদী ও নওয়াজ শরিফ। আগামী মাসে কাজাখস্তানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠক চলাকালীন দুই নেতার বৈঠক হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ইসলামাবাদ। ঠিক যে ভাবে বছর দেড়েক আগ‌ে প্যারিসে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক বৈঠকের ফাঁকে আচমকাই অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনা সেরে নিয়েছিলেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

জুন মাসে কাজাখস্তানের রাজধানী আসতানা-য় প্যারিসের ধাঁচেই একটি বৈঠকে হলেও হতে পারে বলে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন নওয়াজ শরিফের বিদেশনীতি সংক্রান্ত পরামর্শদাতা সরতাজ আজিজ। সে দেশের সংবাদপত্রের কাছে তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতের পক্ষ থেকে আগ্রহ দেখানো হলে পাকিস্তানও বৈঠকের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করবে।’’ সরকারি ভাবে সাউথ ব্লক এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও দু’দেশের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আলোচনায় বসার জন্য চাপ বাড়ছে মোদী সরকারের উপরে।

দু’দেশের মধ্যে আলোচনার পক্ষে মার্কিন প্রশাসনও। ট্রাম্প প্রশাসন চায় না, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হোক। সে ক্ষেত্রে উপমহাদেশে ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে। কারণ মার্কিন প্রশাসনের ধারণা, ভারতের উপরে ফের যে কোনও সময়ে বড়সড় হামলা চালাতে পারে পাক জঙ্গিরা। ফলে চলতি বছরে দু’দেশের মধ্যে তিক্ততা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টর ড্যানিয়েল কোটস।

Advertisement

দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে আলোচনায় বসার প্রশ্নে ক্ষীণ সম্ভাবনা যখন তৈরি হচ্ছে, তখন কিন্তু কুলভূষণ কাণ্ডে কোনও ভাবেই ঢিল দিতে রাজি নয় ইসলামাবাদ। সম্প্রতি চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার কুলভূষণের ফাঁসির আদেশে আন্তর্জাতিক আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ায় কিছুটা ব্যাকফুটে পাক প্রশাসন। পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল আসতার আউসফ আলি বৈঠক করেন আইন মন্ত্রকের সঙ্গে। তার পর নিজেদের সুপারিশ তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। সূত্রের খবর, সুপারিশে আন্তর্জাতিক আদালতের পরামর্শ না মানার পক্ষেই সওয়াল করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। পাক সূত্রের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এ ক্ষেত্রে আপস করা উচিত নয়। কারণ ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের একটি নৌ-বিমানকে গুলি করে নামিয়েছিল ভারত। ইসালামাবাদ বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানায় আন্তর্জাতিক আদালতে। তখন ভারত নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে সওয়াল করলে সেই যুক্তি মেনে নেয় আন্তর্জাতিক আদালত। এখন জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারতের দেখানো সেই পথেই এগোতে চাইছে ইসলামাবাদ।

এ দিকে আজও অশান্ত ছিল ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। সম্প্রতি দুই ভারতীয় জওয়ানের মুণ্ডু কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পাক সেনার বিরুদ্ধে। তার পর থেকেই ভারতের পক্ষ থেকে অতর্কিতে হামলার আশঙ্কা করছে পাক সেনা। সীমান্তে পাক বাহিনী সেই হামলা ঠেকাতে প্রস্তুত কি না, তা খতিয়ে দেখতে আজ নিকিয়াল সীমান্ত পরিদর্শনে যান পাক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া। সঙ্গে ছিলেন রাওলপিন্ডি কোরের কম্যান্ডার নাদিম রাজা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন