Narendra Modi

Narendra Modi: মহোৎসবের বক্তৃতায় মোদীর তির কংগ্রেসকে

উত্তরপ্রদেশ ভোটের আগে সে রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নানা ভাবে তাঁর পূর্বতন কংগ্রেস সরকারের সমালোচনা করছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০৭:০৯
Share:

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

উত্তরপ্রদেশ ভোটের আগে সে রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নানা ভাবে তাঁর পূর্বতন কংগ্রেস সরকারের সমালোচনা করছেন। বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে তাঁর আগের জমানার দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা, লাল ফিতের ফাঁস, রাজ্যের বরাদ্দে ছাড়পত্রে আলস্যের অভিযোগ তুলছেন। সেই তালিকায় আজ যুক্ত হল ‘ভিআইপি সংস্কৃতি’ সংক্রান্ত দোষারোপও। একশো কোটি টিকাকরণের মাইলফলক ছোঁওয়ার পরে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী তুলেছেন তাঁর সরকারের প্রতিষেধক নীতির প্রসঙ্গ। জানিয়েছেন, গোড়াতেই স্থির করে নেওয়া হয়েছিল, প্রতিষেধক বণ্টনের প্রশ্নে কোনও বৈষম্য চলবে না। কোনও ‘ভিআইপি সংস্কৃতি’ সেখানে খাটবে না। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, নাম না করে কংগ্রেস জমানার দিকেই আঙুল তুলেছেন মোদী।

Advertisement

ফলক ছোঁয়ার মহোৎসবে কংগ্রেসের সমালোচনার পাশাপাশিই বাড়িয়েছেন তাঁর স্লোগানের পরিধিও। গোড়ায় যা ছিল ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’, পরে তা বেড়ে হয়, ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস’। আজ তার সঙ্গে জুড়েছেন ‘সব কা প্রয়াস’ শব্দটিও। গত বছর তাঁর থালা বাজানো এবং প্রদীপ জ্বালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে যে সমালোচনা তৈরি হয়েছিল, আজ একশো কোটি টিকাকরণের সুযোগ নিয়ে তার পাল্টা দিতে চেয়েছেন মোদী। বলেছেন, ওই কার্যকলাপে দেশবাসীর মধ্যে ঐক্য তৈরি হয়েছে। মোদীর কথায়, “টিকাকরণের ক্ষেত্রে আমাদের একটা মন্ত্র ছিল। যে হেতু এই ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে কোনও ভেদাভেদ রাখেনি, তার প্রতিষেধক প্রদানের ক্ষেত্রেও কোনও বৈষম্য করা হবে না। ফলে টিকাকরণের সময় কোনও ভিআইপি সংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি।” পাশাপাশি তাঁর যুক্তি, “আমরা যখন বলেছিলাম প্রদীপ জ্বালাতে বা থালা বাজাতে, অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছিলেন, তাতে কি অসুখ চলে যাবে? আসলে এই কার্যকলাপের মাধ্যমে দেশের সবার মধ্যে একতা তৈরি হয়েছিল।”

প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের বক্তৃতার তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র গৌরব বল্লভ বলেছেন, “টিকাকরণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অর্ধসত্য। ভুল তথ্য দিয়ে তিনি দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করছেন।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত ব্যক্তিদের জন্য শোকজ্ঞাপন করবেন এবং তাদের পরিবারকে সমবেদনা জানাবেন। কিন্তু সে সময় তাঁর নেই। তিনি মহোৎসবে ব্যস্ত! বেসরকারি সমীক্ষা বলছে, দেশে ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের জন্য একটি বাক্যও খরচ করতে দেখা গেল না তাঁকে।” বল্লভের বক্তব্য, “কংগ্রেসের জমানায় ছ’টি রোগের টিকাকরণ শুরু হয়েছিল। কিন্তু আমরা নিজেদের বিজ্ঞাপন করিনি। বিনামূল্যে টিকাকরণ হত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে করদাতাদের টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে।”

Advertisement

তৃণমূল কংগ্রেস আবার তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে বলছে, এই একশো কোটির গল্প নেহাতই ‘ভোটের বাজার গরম করার জন্য।’ দেশের ৩২ কোটি মানুষ এখনও প্রথম ডোজ়-ই পাননি। পূর্ণাঙ্গ টিকাকরণ হয়েছে মোট জনসংখ্যার মাত্র ২১ শতাংশের। প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তৃতাকে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকারের প্রবল ব্যর্থতাকে ঢাকার প্রয়াস বলেই মনে করছে তৃণমূল। সরকারি তথ্য তুলে ধরে দলের বক্তব্য, ‘মোদী সরকার ঘোষণা করেছিল, ৯৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্কের টিকা এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই হয়ে যাবে। কিন্তু হিসাব অনুযায়ী, এখনও বাকি রয়েছেন ৬৪.৪৯ কোটি মানুষ। ডিসেম্বরের মধ্যে যা শেষ করা অসম্ভব।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন