— ফাইল চিত্র।
গাঁধী জয়ন্তীতে মহারাষ্ট্রের ওর্ধা থেকে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম’-এর ডাক দিল কংগ্রেস। ওর্ধার সার্কাস রোডে এক জনসভায় রাহুল গাঁধী জানিয়েছেন, বিজেপিকে মানুষ সুযোগ দিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদী মানুষের বিশ্বাস ভেঙেছেন।
আজ ওর্ধায় জেলাশাসকের দফতরের কাছে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর মূর্তিতে মালা দিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন রাহুল। ওর্ধার সার্কাস রোডে শেষ হয় সেই পদযাত্রা। সেই জনসভায় ও কংগ্রেস কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বিজেপিকে ফের আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘‘নরেন্দ্র মোদীকে মানুষ সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি মানুষের বিশ্বাস ভেঙেছেন। মোদীর টায়ার পাংচার হয়ে গিয়েছে। এ বার কংগ্রেস আর মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর মতাদর্শে বিশ্বাস রাখুন। দেশকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিন।’’ রাহুলের বক্তব্য, ‘‘গাঁধী দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার কথা বলতেন। মোদী দেশে বিভাজন তৈরি করছেন। এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্য সম্প্রদায়ের বিবাদ বাধিয়েছেন তিনি।’’
এ দিন ফের রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন রাহুল। তাঁর দাবি, হ্যালের বদলে কেন রাফাল চুক্তিতে দাসো অ্যাভিয়েশনের অংশীদার হিসেবে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বেছে নেওয়া হল তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জবাবদিহি করতে হবে। কারণ, অম্বানীর সংস্থা কোনওদিন বিমান উৎপাদন করেনি। তাঁর ৪৫ হাজার কোটি টাকার ঋণও রয়েছে। অন্য দিকে দীর্ঘ সময় ধরে বিমান তৈরি করছে হ্যাল। কিন্তু তাদের বদলে ৩০ হাজার কোটি টাকার চুক্তি গিয়েছে অম্বানীর পকেটে। রাহুলের দাবি, ‘‘আমি যখন রাফাল নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলাম তখন তিনি আমার চোখে চোখ রেখে উত্তর দিতে পারেননি। কারণ, তিনি এই চুক্তি নিয়ে দেশকে মিথ্যে বলেছেন।’’ কংগ্রেস সভাপতির কথায়, ‘‘মোদী দেশের চৌকিদার হওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তিনি দেশের লুঠের ভাগিদার।’’ কংগ্রেস সভাপতির দাবি, ‘ভারতের চোরেরা’ পিছনের দরজা দিয়ে কালো টাকা সাদা করেছে। আর সাধারণ মানুষকে বাতিল হওয়া নোট বদলের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে ব্যাঙ্কের বাইরে।
আজ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ভারতীয় মননে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর অবদান সম্পর্কে দু’টি প্রস্তাব পাশ করেছে কংগ্রেস। সেইসঙ্গে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম’-এর ডাক দিয়েছে তারা। কারণ, নরেন্দ্র মোদী সরকার ঘৃণা, মিথ্যে, হত্যা ও প্রতারণার রাজনীতি করছে। কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বিরোধিতার। গাঁধীকে নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর প্রচারকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার কথায়, ‘‘গাঁধীর কথা বক্তৃতায় বলা খুব সহজ। এটা রাজনৈতিক সুবিধেবাদ।’’
এ দিন ‘দেশের মানুষ’কে অবহেলা করার প্রতিবাদে বিজেপির সদস্যপদ ও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন নাগপুরের কাটোল কেন্দ্রের বিধায়ক আশিস দেশমুখ। আজ ওর্ধায় রাহুলের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।