কুলগামের উল্লেখ না করেও সন্ত্রাস-নিন্দায় মোদী

এ কথা বলার জন্য মোদী বেছে নিয়েছিলেন আজকের দিনটিকে। সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মবার্ষিকীতেই বিভাজন হল জম্মু-কাশ্মীরের। আর মঞ্চ হিসেবেও মোদী বেছে নিলেন গুজরাতে পটেলের স্ট্যাচু অব ইউনিটিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১০
Share:

সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। বৃহস্পতিবার গুজরাতে। পিটিআই

কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় পাঁচ বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় নরেন্দ্র মোদী সরকারকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল থেকে বাম-কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলের নেতারা। হত্যালীলার দু’দিন পরেও প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। আজ সরাসরি কুলগামের ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেও কাশ্মীরে সন্ত্রাস ও নির্দোষদের হত্যা নিয়ে মুখ খুললেন নরেন্দ্র মোদী। পরোক্ষে গোটা দায় চাপালেন পাকিস্তানের উপরেই।

Advertisement

এ কথা বলার জন্য মোদী বেছে নিয়েছিলেন আজকের দিনটিকে। সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মবার্ষিকীতেই বিভাজন হল জম্মু-কাশ্মীরের। আর মঞ্চ হিসেবেও মোদী বেছে নিলেন গুজরাতে পটেলের স্ট্যাচু অব ইউনিটিকে। ঠিক এক বছর আগে যেটি উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। পাকিস্তানের নাম না-করেই মোদী বললেন, ‘‘যে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে জিততে পারে না, সে আমাদের ঐক্যকে চ্যালেঞ্জ করছে। জম্মু-কাশ্মীরই একমাত্র জায়গা, যেখানে তিন দশকে সন্ত্রাসবাদ ৪০ হাজারের বেশি প্রাণ নিয়েছে। অনেক মা নিজের ছেলেকে হারিয়েছেন, বোনেরা ভাই, অনেক শিশু বাবা-মা-কে। আর কত দিন দেশ এই নিরীহদের মৃত্যুমিছিল দেখতে থাকবে?’’

কালই মোদীর সেনাপতি অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, কুলগামে পাঁচ বাঙালি শ্রমিক হত্যার পিছনে জইশ এবং হিজবুল জঙ্গিরা দায়ী। কিন্তু বিরোধী শিবিরের অনেকে কিন্তু এই কাণ্ডের পিছনে কেন্দ্রকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন, বিশেষ করে জম্মু-কাশ্মীর যখন পুরোপুরি কেন্দ্রীয় সরকারেরই অধীনে। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই পাঁচ জনকে হত্যা করা হয়েছে। বিদেশিদের সফরের সময়তেই এ ধরনের ঘটনা ঘটল কী করে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

Advertisement

মমতার মন্তব্যের বিরোধিতা করে জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কবীন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘এখানে জঙ্গি হানার ঘটনা নতুন নয়। নানা ভাবে পাকিস্তান ষড়যন্ত্র করে থাকে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ ধরনের মন্তব্য অভিপ্রেত নয়।’’

পটেল-জন্মবার্ষিকীতে আজ মোদী পুলওয়ামায় নিহত জওয়ানের পরিবারকে গুজরাতে হাজির করেন। সেখানে জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ ব্যান্ডও প্যারেডে অংশ নেয়। গোটা ঘটনার সঙ্গে মোদী সুকৌশলে ৩৭০ অনুচ্ছেদকেও জুড়ে দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কয়েক দশক ধরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ দেশে একটা দেওয়াল তৈরি করে রেখেছিল। যেটি সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ ছাড়া আর কিছু দেয়নি। সর্দার সাহেবের মূর্তির পাদদেশে মাথা ঝুঁকিয়ে বিনম্রতার সঙ্গে তাঁকে হিসেব দিচ্ছি, আপনার অধরা স্বপ্ন আজ পূর্ণ হল। সে দেওয়াল ভেঙে ফেলা হল। ভারত সব ভাষা, ঐতিহ্য, বিবিধতাকে সম্মান করে। সেই বিবিধতারই উৎসব পালন করা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন