কী করিতে হইবে! অনুশাসন পর্ব চলছে বিজেপিতে

শনিবার থেকে বিজেপি সাংসদদের এই শিখিয়ে-পড়িয়ে নেওয়ার ক্লাস শুরু হল দিল্লিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৩
Share:

শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং দীনদয়াল উপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। রয়েছেন অমিত শাহ এবং জে পি নড্ডা। শনিবার দিল্লিতে বিজেপি সাংসদদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায়। ছবি: পিটিআই

উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। ৩০৩ জনের মধ্যে ৩০৩ জনকেই হাজির থাকতে হবে। শনি-রবিবার বলে ছুটি নেই। প্রাতরাশ থেকে রাত পর্যন্ত ক্লাস চলবে। শিখে নিতে হবে, সাংসদ হিসেবে কী কী করতে হবে, আর কী কী করা চলবে না।

Advertisement

এক কথায় যাকে বলে অনুশাসন-পর্ব।

শনিবার থেকে বিজেপি সাংসদদের এই শিখিয়ে-পড়িয়ে নেওয়ার ক্লাস শুরু হল দিল্লিতে। যার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট ভাষায় মনে করিয়ে দিলেন, সাংসদ হয়ে গেলেও বিজেপির কর্মী থাকতে হবে। দলের কর্মীর মনোভাবই ভিতরে জিইয়ে রাখতে হবে।

Advertisement

দু’দিনের এই ‘অভ্যাস-বর্গ’-য় রবিবার আলাদা ভাবে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। যেখানে বিজেপির সাংসদরা বাংলার পরিস্থিতির কথা বাকি রাজ্যের সাংসদদের সামনে তুলে ধরবেন। শেখানো হবে বিজেপির নমো অ্যাপ ব্যবহার করাও। ফেসবুক-টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য।

‘অভ্যাস-বর্গ’-র প্রধান উদ্দেশ্য অবশ্য লোকসভার সাংসদদের শিখিয়ে-পড়িয়ে নেওয়া। মোদী লোকসভা ভোটের পরেই বলেছিলেন, সাংসদদের উল্টোপাল্টা মন্তব্য করা, যে কোনও বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর অভ্যাস ছাড়তে হবে। সাক্ষী মহারাজ থেকে প্রজ্ঞা ঠাকুরের মতো নেতানেত্রীরাই তাঁর নিশানায় ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে সব সাংসদদেরই অনুশাসনে রাখতে চাইছে বিজেপি।

সংসদের লাইব্রেরিতে দলের অভিজ্ঞ সাংসদরা যখন ক্লাস নিচ্ছেন, তখন মোদী নিজে বাকি সকলের সঙ্গে দর্শকাসনে বসে মন দিয়ে তাঁদের কথা শুনেছেন। সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, তিনি ২০১৪-য় প্রথম বার সাংসদ হিসেবে জিতে এসেছিলেন। সে বারই প্রধানমন্ত্রী হলেও তিনি সুরজকুণ্ডে ‘অভ্যাস বর্গ’-য় যোগ দিয়ে অনেক কিছু শিখেছিলেন।

মোদী আজ সাংসদদের বলেছেন, হাজারো কর্মীর পরিশ্রমেই সাংসদরা জিতে আসেন। কিন্তু নতুন বউ আসার পরে যেমন শাশুড়ি-মায়ের ভয় হয়, ছেলে এ বার তাঁকে ভুলে যাবে, তেমনই ভোটের পরে কর্মীদের ভয় হয়, সাংসদরা তাঁদের ভুলে যাবেন! আর হয়তো ফোনই তুলবেন না। তাই নিজের কাজ ও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে হবে।

মোদীর উপদেশ, বয়স বাড়লেও সব সময় ছাত্র থাকতে হবে। শেখার মনোভাব নিয়ে চলতে হবে। সিপিএমের কর্মীদের যেমন মতাদর্শ ও অনুশাসনের ক্লাস হয়, তেমনই বিজেপিতেও অনুশাসন ও মতাদর্শের কথা স্মরণ করিয়েছেন মোদী। তাঁর বক্তব্য, বিজেপি একটা সংগঠিত সংস্থা। অনেককে এককাট্টা করে তৈরি সংস্থা নয়। মতাদর্শের কারণেই বিজেপির উত্তরোত্তর বৃদ্ধি। পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে নয়।

সারা দিন জুড়েই যে কড়া ক্লাস চলেছে, এমন নয়। অনুশাসনের মধ্যেই রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেখিয়েছেন, বাবুল সুপ্রিয়, মনোজ তিওয়ারি, রবি কিষেণের মতো সিনেমা জগতের থেকে আসা সাংসদরা একসঙ্গে কিশোর কুমারের গান ধরেছেন। বাবুল গাইছেন, ‘আকাশ কেন ডাকে’। মনোজ-রবিরা সেটাই হিন্দিতে ‘ইয়ে শাম মস্তানি’ গাইছেন। সন্ধ্যায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ সংগঠন ও সংস্কৃতি নিয়ে বলেছেন, সাংসদদের কাজ করতে হবে। কিন্তু মতাদর্শ লঘু করা চলবে না। কার্যকরী সভাপতি জে পি নড্ডা ক্লাস নিয়েছেন, বিজেপির পঞ্চ-নিষ্ঠা নিয়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement