কেরলকে ত্রাণ ৫০০ কোটি, কপ্টার-সফরে মোদী

বানভাসি চেঙ্গান্নুর উদ্ধারের কাজে আরও বেশি কপ্টার দাবি করেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, আজ রাতেই উদ্ধার শুরু না হলে মৃতের সংখ্যা বাড়বে। রাজ্যবাসী সিঁটিয়ে ৩৩টি বাঁধের লাগামছাড়া চেহারাতেও। কোনও কোনও বা়ড়ির দোতলাতেও হাঁটুজল উঠে গিয়েছিল। আজ নেমেছে। কোঝিকো়ড় প্রশাসন অবশ্য বলছে, আজ দু’টি বাঁধের গেট বন্ধ করা গিয়েছে। কাল থেকে কিছু এলাকায় পুনর্বাসনও শুরু হবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০৪
Share:

চিন্তিত: কেরলের বন্যা পরিস্থিতি দেখছেন মোদী। শনিবার। ছবি: পিটিআই।

দুর্যোগের মধ্যেই আজ সেনা-কপ্টারে কেরলের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরেই প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে অবিলম্বে ৫০০ কোটি টাকা অর্থ সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন তিনি। বন্যায় মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৩২৪ ছাড়িয়েছে। মৃতদের পরিবার-পিছু ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে গুরুতর জখমদের। ২০ অগস্ট পর্যন্ত কেরলের নানা অংশে ভারী বৃষ্টি হবে বলে পূর্বাভাস। তবে কাল রাজ্যে লাল সতর্কতা থাকছে না।

Advertisement

কেরল তবু অথৈ জলেই। বানভাসি চেঙ্গান্নুর উদ্ধারের কাজে আরও বেশি কপ্টার দাবি করেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, আজ রাতেই উদ্ধার শুরু না হলে মৃতের সংখ্যা বাড়বে। রাজ্যবাসী সিঁটিয়ে ৩৩টি বাঁধের লাগামছাড়া চেহারাতেও। কোনও কোনও বা়ড়ির দোতলাতেও হাঁটুজল উঠে গিয়েছিল। আজ নেমেছে। কোঝিকো়ড় প্রশাসন অবশ্য বলছে, আজ দু’টি বাঁধের গেট বন্ধ করা গিয়েছে। কাল থেকে কিছু এলাকায় পুনর্বাসনও শুরু হবে।

শুক্রবার অটলবিহারী বাজপেয়ীর শেষকৃত্য মিটতেই কেরলে যান মোদী। প্রবল বৃষ্টিতে আজ প্রথমে তাঁর কপ্টার-সফর ভেস্তে যেতে বসেছিল। পরে কোচি ও সংলগ্ন এলাকা আকাশপথে পরিদর্শন করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, রাজ্যপাল পি সদাশিবম এবং কেরলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কে জে আলফোনস। আগেই কেরলের জন্য ১০০ কোটি টাকা সাহায্য ঘোষণা করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

Advertisement

দেখুন ভিডিয়ো

আজ কপ্টার-সফরের পরে মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ফের ২০০০ কোটি টাকা সাহায্য চান বিজয়ন। তিনি জানান, বন্যায় রাজ্যের প্রাথমিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৯ হাজার ৫১২ কোটি টাকা। পরে প্রধানমন্ত্রী টুইটারে লেখেন, ‘‘কেরলের মানুষের সংগ্রামী মানসিকতাকে কুর্নিশ জানাই। গোটা দেশ কেরলের পাশে।’’ যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে ও ক্ষতিগ্রস্ত জাতীয় সড়কের মেরামতির কাজ শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। রাজ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও বিপর্যস্ত। তাই কেরল থেকে বিশেষ ট্রেন ও উড়ান চালানো হবে বলে জানিয়েছে রেল মন্ত্রক ও একাধিক বিমান সংস্থা।

কাল রবিবারেও তিরুঅনন্তপুরমে সব সরকারি দফতর খোলা রাখা হবে বলে জানিয়েছে সরকার। কেরলের বন্যা পরিস্থিতিকে অবিলম্বে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করার জন্য মোদীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন রাহুল গাঁধী।

উদ্ধার: বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই অসুস্থ বাসিন্দাকে। শনিবার কোচিতে। ছবি: এএফপি।

এ দিন মহারাষ্ট্র সরকার ২০ কোটি টাকার ত্রাণ ঘোষণা করেছে। বিহার, গুজরাত, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ দিচ্ছে ১০ কোটি করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে দুর্গতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। সব রাজ্যের কংগ্রেস বিধায়ক এবং সাংসদদের এক মাসের বেতন ত্রাণ তহবিলে দান করার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। একই নির্দেশ দিয়েছেন অরবিন্দ কেজরীবাল।

কেরলে প্রায় ১০ লক্ষ বাঙালি থাকেন। তাঁদের মধ্যে এর্নাকুলামবাসী ৩ লক্ষ শ্রমিক বড় অসুবিধায় পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মালয়লি ভাষা না-জানার ফলেই এঁরা ঠিকমতো সাহায্য পাচ্ছেন না। ‘কেরল ফ্লাড মাল্টিলিঙ্গুয়াল কল সেন্টার’ নামের একটি ফেসবুক পেজে এই সংক্রান্ত জরুরি তথ্য দেওয়া হচ্ছে। আজ কেরল সরকারের কাছে ২০০ জন শ্রমিক সম্পর্কে তথ্য চেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। কেরলে যাওয়া শ্রমিকদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন