হিন্দুত্বের বার্তাতেই ভরসা রাখছেন নমো

কাশীর পর সোমনাথ। ঠিক যেমন ষষ্ঠ দফার ভোটের দিন সপ্তম দফার বারাণসীতে সকাল সকাল বিশ্বনাথ দর্শন করতে গিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০৪:৩৪
Share:

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।  

কাশীর পর সোমনাথ।

Advertisement

ঠিক যেমন ষষ্ঠ দফার ভোটের দিন সপ্তম দফার বারাণসীতে সকাল সকাল বিশ্বনাথ দর্শন করতে গিয়েছিলেন তিনি। তেমনই আজ উত্তরপ্রদেশের সপ্তম ও শেষ দফার ভোটে গুজরাতে গিয়ে শিবের আর এক মন্দির সোমনাথে হাজির হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তার সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা হল চ্যানেলে চ্যানেলে।

উত্তরপ্রদেশের শেষ কয়েক দফার ভোটের মেরুকরণে মরিয়া নমো এই ভাবেই সুকৌশলে হিন্দুত্ব উস্কে দিতে চাইছেন। আজ শেষ দফার ভোটের প্রচার দু’দিন আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার আগে কালও দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে তাঁর মুখে বার বার এসেছে কাশীর কথা। আর আজ সকালে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও কেশুভাই পটেলকে সঙ্গে নিয়ে মোদী চলে যান সোমনাথ দর্শনে।

Advertisement

নিজের রাজ্য গুজরাতের কাঁটা এখনও বিঁধে রয়েছে মোদীর গলায়। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রাশ একটু আলগা দিতেই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে সে রাজ্যে। পটেল আন্দোলনের রেশ রয়েছে। এ বছরের শেষে গুজরাতের বিধানসভা ভোট তাঁর সম্মানের লড়াই। কিন্তু তার আগে উত্তরপ্রদেশের ভোটের চিন্তা থেকে কিছুতেই নিষ্কৃতি পাচ্ছেন না মোদী। তাই গত কয়েক সপ্তাহ জুড়ে প্রধানমন্ত্রীর এই ধর্মপ্রেম বিরোধীদেরও কপালে ভাঁজ ফেলেছে। অনেকের মতে, এর আগে অনেক ধার্মিক প্রধানমন্ত্রী এসেছেন। কিন্তু কেউ প্রকাশ্যে এত চড়া দাগে কেউ ব্যক্তিগত ধর্মাচরণকে তুলে ধরেননি।

মায়াবতীর মতো বিরোধী নেত্রী বলছেন, এত মন্দির ভ্রমণেও লাভ হবে না মোদীর। কটাক্ষ করছেন রাহুল গাঁধী, অখিলেশ যাদবও। বিরোধীদের এই অভিমত অমূলক নয়, কারণ শেষ বাজারের প্রচারে বারাণসীতে গিয়ে মোদী শুধু বিশ্বনাথ দর্শনই করেননি, গিয়েছিলেন কাল ভৈরব মন্দিরেও। স্থানীয় বিশ্বাস, সেখানে পুজো দিলে পাপ স্খালন হয়, পূর্ণ হয় মনোস্কামনা। এর পাশাপাশি ১৫টি রুদ্রাক্ষের মালা পরে কালো গরুকে খাইয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তা প্রচার করে। সোমবার কালো গরুকে খাওয়ালে নাকি মনের বাসনা পূর্ণ হয়। উত্তরপ্রদেশের প্রতিটি জনসভা তিনি শুরু করেছেন, ‘হর হর মহাদেব’ দিয়ে, আর শেষ করেছেন ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি তুলে। এই চিত্রনাট্যে কোথাও এমন খামতি মিলবে না, যাতে বিরোধীরা নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলতে পারেন। সকলেই বুঝছেন, উত্তরপ্রদেশের শেষ ভোটের দিন সকালে সোমনাথ মন্দিরের জলাভিষেক দেওয়া ও তার সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থার আসল লক্ষ্য ভোট-রাজ্য উত্তরপ্রদেশই। কিন্তু বিরোধীরা বলছেন— উত্তরপ্রদেশের জয় নিয়ে মোদী যে নিশ্চিত নন, সেটা বুঝেই এত বেপরোয়া তিনি। রাহুল গাঁধীরা বলছেন, আতঙ্কেই এত মরিয়া প্রধানমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন