মহাসেতু: জুড়ল অসম-অরুণাচল। শুক্রবার চালু হলো দেশের দীর্ঘতম ‘ভূপেন হাজরিকা সেতু’। হেলিকপ্টার থেকে ক্যামেরায়। ছবি: রাজীবাক্ষ রক্ষিত।
লোহিত, নোয়া ডিহিং আর কুণ্ডিল মিশে উৎপত্তি ধলা নদীর। ৪ কিলোমিটার এগোনোর পরে দিবাং ও সিয়াং নদীর স্রোত মিশলে তার নাম বদলায় ব্রহ্মপুত্রে।
সেই ধলা নদীর উপরে ‘মহাসেতু’র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নাম দিলেন ‘ভূপেন হাজরিকা সেতু’। ২ হাজার ৫৬ কোটি টাকায় ৩০ হাজার টন ইস্পাতে তৈরি ৯.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ (অ্যাপ্রোচ রোড জুড়লে ২৮ কিলোমিটার) ওই সেতু উজানি-অসম থেকে অরুণাচলের দূরত্ব কমাল পাক্কা ১৬৫ কিলোমিটার।
ধলা থেকে শদিয়া। দুটোই উজানি অসমের তিনিসুকিয়ায়। কিন্তু নদীপথে দু’টি জায়গার ‘দূরত্ব’ ছিল ঘণ্টাপাঁচেক। নতুন সেতু ও অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির পর তা নেমে এল কয়েক মিনিটে। এতে উপকৃত হবেন অরুণাচলবাসীও। আগে অরুণাচলের রোয়িং, মিপি, আনদ্রালা, আনিনির বাসিন্দাদের চিকিৎসা বা অন্য প্রয়োজনে ফেরি পার করে ধলায় আসতে হতো। সুবিধা হল সেনাবাহিনীরও। নতুন সেতু দিয়ে তারা অনায়াসে কনভয়, ৬০ টনের সাঁজোয়া ট্যাঙ্ক নিয়ে চিন সীমান্তে পৌঁছতে পারবে।
মাঝপথে: তাঁর সরকারের তিন বছর পূর্তির দিনে অসমে ধলা-শদিয়া মহাসেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
২০১০-এ এই সেতুর কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়। কেন্দ্র এবং রাজ্য দু’জায়গাতেই তখন কংগ্রেস সরকার। শুক্রবার এই সেতুর উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী, অসমের রাজ্যপাল বনোয়ারিলাল পুরোহিত, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কনভয় সেতু ধরে এগোতে থাকে। কিছুটা দূরে যাওয়ার পর গাড়ি থেকে নেমে ধলার দিকে হাঁটতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। ডেকে নেন মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল, নিতিনকে। সঙ্গে ছিলেন অরুণাচলের উপ-মুখ্যমন্ত্রী চাওনা মেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, শদিয়ায় জন্মেছিলেন ভূপেন হাজরিকা। প্রয়াত শিল্পীর স্মৃতিতেই সেতুর নামকরণ করেন তিনি। কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী জানান, ধলা-শদিয়া সেতুর দেশের ‘দীর্ঘতম’ হওয়ার তকমা সাময়িক। কারণ ধুবুরি থেকে মেঘালয় পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর কাজ শুরু করছে কেন্দ্র। পরে গোগামুখে জাতীয় কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘কৃষি প্রযুক্তিতে বিপ্লবের প্রয়োজন ছিল। এই কেন্দ্র চিরহরিৎ বিপ্লব আনবে।’’ ‘সম্পদা’ নামে নতুন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কথাও ঘোষণা করেন মোদী। তিনি জানান, ওই প্রকল্প কৃষিদ্রব্যের লাভজনক উৎপাদন, বিপণন ও প্রক্রিয়াকরণে সাহায্য করবে।