ঐতিহ্য: স্থানীয় পোশাকে রাহুল গাঁধী। নানদেড়ে শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমাজে বিভাজনের খেলায় মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ করলেন রাহুল গাঁধী। শুক্রবার মহারাষ্ট্রের নানদেড়ে দলীয় সমাবেশে কংগ্রেস সহ-সভাপতি বলেন, ‘‘হরিয়ানায় জাঠদের সঙ্গে অ-জাঠদের লড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মহারাষ্ট্রে বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে মরাঠি এবং অ-মরাঠিদের মধ্যে। এই বিভেদের রাজনীতির কারণেই মোদী ও বিজেপির উপর জনগণের ক্ষোভ বাড়ছে।’’ দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে রাহুলের বক্তব্য, ‘‘ক্ষমতায় টিকে থাকাই বিজেপি ও আরএসএসের এক মাত্র লক্ষ্য। এক মাত্র কংগ্রেসের আদর্শই বিজেপি এবং আরএসএসের মোকাবিলা করতে পারে। একটি-দু’টি ভোটে ওরা লড়াই করবে। কিন্তু তার পর কংগ্রেসই ক্ষমতায় ফিরে আসবে।’’
নোট বাতিল নিয়েও মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন কংগ্রেস সহ-সহাপতি। নোট বাতিল সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে রাহুল বলেন, ‘‘এর মাধ্যমে চোরেদের কালো টাকা সাদা হয়েছে।’’ রাহুল বলেন, ‘‘প্রথমে সরকার বলল সন্ত্রাসবাদে লাগাম পরানোর জন্যই নোট বাতিল করা হয়েছে। তার পরে বলল, কালো টাকা ঠেকাতেই নোটবন্দি। কিন্তু সবাই জানে, দেশে কালো টাকার ৯০ শতাংশ ঢুকে রয়েছে রিয়েল এস্টেট এবং সোনায়।’’ রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘জানি না মোদী কেন কৃষক, গরিব শ্রমিক এবং গৃহবধূদের টাকার পিছনে ছুটছেন।’’ নোটবন্দি নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কেরও তুমুল সমালোচনা করেন রাহুল। বলেন, ‘‘নোট বাতিলের পরে পুরনো টাকার ৯৯ শতাংশই যে ফিরে এসেছে, তা জানাতেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক বছর লেগে গেল।’’ দেশের জিডিপি ধাক্কা খাওয়ার জন্যও মোদীকে একহাত নিয়েছেন রাহুল। ‘‘প্রধানমন্ত্রীই এর জন্য দায়ী’’— দাবি কংগ্রেস সহ-সভাপতির।
রাহুলের আরও অভিযোগ, মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বললেও গোয়া এবং মণিপুরে বিধায়কদের কিনেছে বিজেপি। গুজরাতেও সেই চেষ্টা হয়েছিল। কর্মসংস্থানের প্রশ্ন নিয়েও মোদীর বিরুদ্ধে সরব হন রাহুল। বলেন, ‘‘মোদী কথা দিয়েছিলেন, প্রতি বছর দু’কোটি বেকারের চাকরি হবে। কিন্তু তা হয়নি।’’ রাহুলের দাবি, ‘‘জিএসটি-র কৃতিত্ব বিজেপি নিলেও বিষয়টি শুরু করেছিল কংগ্রেসই।’’
এ দিন মহারাষ্ট্রের পারভানিতে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন রাহুল। চাষিদের দুর্দশার জন্যও মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি।