প্রধানমন্ত্রীর প্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যুমেরাং এখন

লোকসভা ভোটে সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরেই তাঁর উত্থান। এমনকী ভোটে জেতার পর অনেক বিদেশি পত্রিকায় লেখা হয়েছিল, ‘ভারতের প্রথম সোশ্যাল মিডিয়া প্রধানমন্ত্রী’। আজ আক্রমণের খোঁচায় বিদ্ধ হয়ে সেই নরেন্দ্র মোদীই সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যকলাপ নিয়ে বেশ বিরক্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৫২
Share:

লোকসভা ভোটে সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরেই তাঁর উত্থান। এমনকী ভোটে জেতার পর অনেক বিদেশি পত্রিকায় লেখা হয়েছিল, ‘ভারতের প্রথম সোশ্যাল মিডিয়া প্রধানমন্ত্রী’। আজ আক্রমণের খোঁচায় বিদ্ধ হয়ে সেই নরেন্দ্র মোদীই সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যকলাপ নিয়ে বেশ বিরক্ত।

Advertisement

আর কোনও রকম রাখঢাক না করে সেই বিরক্তি আজ খোলা হাটের মধ্যেই প্রকাশ করে ফেললেন তিনি। সংসদের অধিবেশন সুষ্ঠু ভাবে চালাতে চেয়ে বিরোধী নেতাদের নিজের দফতরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই কথায় কথায় নিজের উষ্মা প্রকাশ করে ফেলেন মোদী। বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সেটিকে আরও ভাল ভাবে ব্যবহার করা যেত। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ‘ক’ যদি কিছু বলেন, তো ‘খ’ আরও কিছু বলে বসেন। ‘গ’ তা নিয়ে আরও কিছু মন্তব্য করে ফেলেন। একে গঠনমূলক কাজে যে ভাবে ব্যবহার করা যেত, কিন্তু তা হচ্ছে না।

লোকসভা ভোটের আগে থেকেই মোদী সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর দিয়ে এসেছেন। সেখানে তাঁর প্রচারের জন্য একটি বড়সড় টিমও তৈরি করা হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে নানান আঙ্গিকে সেখানে নিরন্তর প্রচার করা হতো। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও সব মন্ত্রীকে মন্ত্রকের কাজকর্মগুলি নিয়ে প্রচারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন মোদী। এ কাজে দলের সাংসদদেরও একই ভাবে মন দিতে বলেছেন তিনি। আজ পর্যন্ত একটিও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি বটে কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় নিরন্তর ব্যস্ত থাকেন প্রধানমন্ত্রী। যখন যা বলার তা বলে ফেলেন সেখানেই। অনেক সময় স্পর্শকাতর বিষয়ে নীরব থাকেন বলে বিরোধীদের কটাক্ষও হজম করতে হয় মোদীকে।

Advertisement

কিন্তু এখন হঠাৎ কী হল?

কংগ্রেসের এক নেতা রসিকতা করে বলেন, ভোটের আগে মোদীই শিখিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়াকে কী ভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করে ফায়দা তুলতে হয়। সেই সময় অন্য দলগুলি আনাড়ি ছিল। ফাঁকা মাঠে একা গোল দিয়ে গিয়েছেন মোদী। আর এখন বাকি দলগুলিও একটু-আধটু সেই কায়দা শিখতে শুরু করেছে। সরকারের দেড় বছরের মাথায় মোদী-জাদুও কোথাও নেই। একের পর এক ঘটনায় বসে বসে গোল খাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। দাদরি কাণ্ড হোক বা হায়দরাবাদে ছাত্র আত্মহত্যা— সবেতেই সক্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া। আর সেখানে যে ঝড়, তার সিংহভাগই এখন আর বিজেপির পক্ষে নেই।

বিজেপির এক নেতা কবুল করেন, বিরোধী দলে থাকলে শাসককে আঘাত করাটা সহজ। লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশ জুড়ে হতাশার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। মোদীই তখন ছিলেন আশার আলো। এখন শাসক দলে এসে যাবতীয় দায়িত্ব তাঁর মাথার উপরে। বিরোধীদের পক্ষে ঘুষি মারাটা এখন অনেক সহজ কাজ। তবে বিজেপি নেতার দাবি, নরেন্দ্র মোদী কাজ করছেন না, এমন নয়। আশা করা যায়, মানুষ এক দিন সে কাজ দেখতে পাবেন। তখনই সোশ্যাল মিডিয়াতেই নতুন ঝড় উঠবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন