প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাবি, দেশের সব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে।
মণিপুরের সেনাপতি জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম লেইসাং। গত কাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সেই গ্রামে পৌঁছে গেল বিদ্যুৎ সংযোগ। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ, রেলমন্ত্রী পীযূয গয়ালেরা টুইট করে জানালেন, এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে ভারত। দেশের সব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে। কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে উৎসব করছে বিজেপি।
নরেন্দ্র মোদী সরকার জানিয়েছে, দেশে ৫,৯৭,৪৬৪টি গ্রাম রয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে ১৮,৪৫২টি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া বাকি ছিল। ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় যোজনা’-র অধীনে সে কাজ এক হাজার দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ৯৮৭ দিনের মধ্যেই সেই কাজ শেষ হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্মী-আধিকারিকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেলেই দেশের সব নাগরিক বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেন এমনটা ভাবা ঠিক নয়। কোনও গ্রামে প্রাথমিক বৈদ্যুতিক পরিকাঠামো তৈরি হলে এবং সেখানকার ১০ শতাংশ বাড়ি, স্থানীয় প্রশাসনিক দফতর ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র বিদ্যুৎ পেলেই গ্রামটিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে বলে ধরে নেয় সরকার। প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দিতে আরও সময় লাগবে। মোদী সরকার জানিয়েছে, সে কাজও যত দ্রুত সম্ভব করার চেষ্টা চলছে।
কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার অবশ্য দাবি, বিজেপির উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। তাঁর দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, দেশে ৬,৪৯,৮৬৭টি গ্রাম রয়েছে। ৬০ বছরের শাসনকালে কংগ্রেস প্রতি বছরে ১০ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। ২০১৪ সালের ২৬ মে যখন নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এলেন তখন ১৮,৪৫২টি গ্রামে বিদ্যুৎ দেওয়া বাকি ছিল। তা দিতে বিজেপি সরকারের লেগে গেল ৪৬ মাস। অর্থাৎ বছরে ৪,৮১৩টি গ্রামে বিদ্যুৎ দিয়েছে বিজেপি সরকার। ইউপিএ আমলের চেয়ে এনডিএ আমলে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার গতি শ্লথ হয়েছে।
গত বছরে এক রিপোর্টে বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানায়, বিশ্বে এখনও ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি। সেই তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারত ও নাইজেরিয়ার নাম।