দুই প্রধানমন্ত্রী: শেখ হাসিনার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
শান্তিনিকেতনে এসে শুধু অনুষ্ঠান মঞ্চে পাশাপাশি বসাই নয়, পড়শি দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা একান্তে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একসঙ্গে দু’জনে মধ্যাহ্নভোজও সারবেন। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও বিদেশ মন্ত্রক আলোচনার পরে শেখ হাসিনার যে সফরসূচি চূড়ান্ত হয়েছে, তাতে ২৫ মে, শুক্রবার দুপুর ১টা ৪০ থেকে বেলা আড়াইটে পর্যন্ত দুই রাষ্ট্রপ্রধানের এই ‘খানে পে চর্চা’-র সময় রাখা হয়েছে।
এর আগে চিনে গিয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে ‘চায় পে চর্চা’ করেছিলেন মোদী। দু’জনের আলোচনায় নির্দিষ্ট আলোচ্য বিষয় রাখা না-হলেও দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করেছিলেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রের খবর, মোদী-হাসিনা ‘মধ্যাহ্নভোজ-বৈঠক’-এও আলোচনার বাঁধাধরা বিষয় রাখা হচ্ছে না। শান্তিনিকেতনে ২৫ কোটি টাকা খরচ করে যে বাংলাদেশ ভবন হাসিনা সরকার তৈরি করেছে, সেই ভবনেই হবে এই বৈঠক। এই ভবনের উদ্বোধন করতেই শান্তিনিকেতনে আসছেন হাসিনা। সেই দিনেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আসছেন মোদী। সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে মিনিট পনেরো বক্তৃতা করবেন হাসিনাও।
এর আগে লন্ডনে কমনওয়েলথ বৈঠকের ফাঁকে মুখোমুখি কথা বলেছেন মোদী ও হাসিনা। কিন্তু বছর শেষে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে শান্তিনিকেতনের বৈঠক বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে নিজের বাসভবনে এক দল ভারতীয় সাংবাদিকের সঙ্গে আলোচনার সময়ে হাসিনা বলেছিলেন, বন্ধু ভারতকে হাত উপুড় করে সাহায্য করেছে তাঁর সরকার। ফের এই সরকারকে ফিরিয়ে আনতে তিনি ভারতের সহযোগিতা প্রার্থী। হাসিনার কথায়, মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ভারত বরাবর তাঁদের পাশে থেকেছে। শুধু এক বার ছাড়া। ২০০১-এর নির্বাচনে তারা অন্য শক্তিকে সমর্থন করেছিল, যারা ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের মাটিকে পাকিস্তানি গুপ্তচর আইএসআই-এর ঘাঁটিতে পরিণত করেছিল। হাসিনা বলেছিলেন, “১০ ট্রাক অস্ত্র তো ধরা পড়েছিল! এমন কত ট্রাক অস্ত্র তারা ভারতের জঙ্গিদের জন্য পাঠিয়েছিল, কে জানে?” সূত্রের খবর, মোদীর সঙ্গে তাঁর আলোচনায় সে দেশের নির্বাচনের বিষয়টিই গুরুত্ব পাবে।
শনিবার, ২৬ মে আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে হাজির থেকে সাম্মানিক ডক্টরেট নেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে হাসিনার। এ দিন নিজের বিশেষ বিমানেই তিনি অন্ডাল বিমানবন্দরে নামবেন। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন সড়কপথে। অন্ডালে নবনির্মিত কাজী নজরুল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছেও বিশেষ দিন হবে এটি। কারণ, ওই দিনই প্রথম কোনও বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের বিমান অন্ডালের রানওয়ে স্পর্শ করবে।