দলিত বিক্ষোভে পাল্টা তির মোদীর

গত চার বছর ধরে এনডিএ-র শরিক হয়েও এত ‘সম্মান’ পাননি আটাওয়ালে। কিন্তু বিজেপির গলায় দলিত কাঁটা বিঁধে যাওয়ার পর থেকে হঠাৎই গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে তাঁর!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৫২
Share:

নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

দুপুর বেলায় নিজের দফতরে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের কর্তাদের দেখে হতবাক বিজেপির শরিক নেতা রামদাস আটাওয়ালে। হাতজোড় করে কর্তারা অনুরোধ করছেন, রাতে দলিতদের বিষয় নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। অনুগ্রহ করে আসবেন।

Advertisement

গত চার বছর ধরে এনডিএ-র শরিক হয়েও এত ‘সম্মান’ পাননি আটাওয়ালে। কিন্তু বিজেপির গলায় দলিত কাঁটা বিঁধে যাওয়ার পর থেকে হঠাৎই গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে তাঁর!

দু’দিন আগেই দেশ জুড়ে দলিতদের ভারত-বন্‌ধে নড়েচড়ে বসেছেন নরেন্দ্র মোদী। কাল পর্যন্তও রাহুল গাঁধী প্রশ্ন তুলে এসেছেন, নরেন্দ্র মোদী চুপ কেন। চাপের মুখে আজ প্রথম মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লিতে সাংসদ ও তাঁদের অতিথিদের জন্য নতুন ভবনের উদ্বোধনের সময়ে মোদী হঠাৎই টেনে আনেন বাবাসাহেব অম্বেডকর আর দলিত প্রসঙ্গ। দলিতদের নিয়ে রাজনীতি করার জন্য উল্টে তিনি বিঁধেছেন বিরোধীদেরই। শুধু তাই নয়, মোদী কৃতিত্ব দাবি করেন, বাবাসাহেবকে যত সম্মান তাঁর সরকার দিয়েছে, আর কেউ তা দেয়নি। সমাজের শেষ প্রান্তে থাকা মানুষদের উন্নয়নে তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর।

Advertisement

আরও পড়ুন: আঁধার ঠেলে রত্নভাণ্ডার দর্শন

ঠিক ছিল, ১৪ এপ্রিল অম্বেডকরের জন্মদিন থেকেই মোদী দলিতদের বিষয় নিয়ে ঝাঁপাবেন। কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তার দশ দিন আগে থেকেই পুরোদমে প্রচার শুরু করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। জন্মদিনের এক দিন আগে, দিল্লিতে অম্বেডকর স্মারক উদ্বোধনের ঘোষণাটিও আজই করে ফেলেছেন মোদী। আর গত কালের মতো আজও ফের তাঁর সেনাপতি অমিত শাহ বলেছেন, দলিতদের সংরক্ষণ কোনও ভাবেই তোলা হবে না। ক্ষত মেরামতির কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে দলিত সাংসদদের নিয়ে রাতে বৈঠকেও বসেছিলেন তিনি।

বিজেপির এক দলিত নেতা বলেন, দু’দিন আগে দলিতদের যে ভারত-বন্‌ধ হয়েছিল, তাতে সামনে কোনও দলের নেতা না এলেও নেপথ্যে ছিলেন। সেই বিরোধী দলের নেতাদের এখন রাজ্যে-রাজ্যে খুঁজে বের করছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির পুলিশ। বিজেপির মতে, পুরো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে দলিতদের হিংসায় নামানো হয়েছে।

কিন্তু ফের দলিতদের মন জয় করতে নামতে চাইছেন মোদী-শাহ। মোদী আজ বলেন, ‘‘বাবাসাহেবের নামে রাজনীতির দৌড়ে সকলে নেমে পড়েন। কিন্তু বাবাসাহেবের জন্য শ্রদ্ধা, সম্মান আমাদের রন্ধ্রে। অন্য কোনও সরকার আমাদের মতো এত সম্মান তাঁকে দেখাননি। তাঁকে রাজনীতিতে না টেনে তাঁর দেখানো ‘বন্ধুত্বের’ পথে চলতে হবে। তা ছাড়া এগোনো যাবে না।’’ এই সূত্র ধরে মোদীর ঝুলি থেকে অনেক দিন পরে বেরিয়ে এসেছে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর স্লোগান।

কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘দলিতদের উপর সব থেকে বেশি অত্যাচার করেছে মোদী সরকারই। দলিতদের প্রতি তাদের মানসিকতা কী, তা সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে সরকারের মনোভাবেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর পর প্রধানমন্ত্রী যতই চেষ্টা করুন, কোনও ফল মিলবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন