Narendra Modi

প্রযুক্তি-সমাধানে ‘ভারত-নির্ভরতা’ চান মোদী

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের মতে, নতুন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউসে পা রাখার আগে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৩৮
Share:

ভিডিয়ো বক্তৃতা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

ভারতের কল-কারখানায় তৈরি পণ্য বিক্রি হবে বিশ্ব জুড়ে। প্রথমে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং হালে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার স্লোগানে এই স্বপ্নই দেখিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার ব্যবসায় বিভিন্ন প্রয়োজন মেটানোর প্রযুক্তিগত সমাধানও (টেকনোলজিকাল সলিউশন) দেশে তৈরি করে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে আহ্বান জানালেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, দক্ষ মানবসম্পদ, বিশাল বাজার আর দ্রুত ডিজিটাল ব্যবস্থায় স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠতে থাকা ভারত সেই সম্ভাবনার মশলায় ঠাসা। কিন্তু ধাক্কা খাওয়া রফতানি আর বিবর্ণ অর্থনীতির ছবি তুলে ধরে বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘গর্বের’ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পেই বা নতুন লগ্নির সম্ভাবনা কতটুকু?

Advertisement

আজ বেঙ্গালুরু প্রযুক্তি সামিটে ভিডিয়ো-বক্তৃতায় মোদী বলেন, “এই তথ্য(প্রযুক্তি)নির্ভর যুগে সকলকে টপকে যাওয়ার মতো সম্ভাবনাময় বিন্দুতে দাঁড়িয়ে ভারত। এ দেশে স্থানীয় ভাবে তৈরি প্রযুক্তিগত সমাধানের ক্ষমতা আছে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হওয়ার। সময় এসেছে ভারতের মাটিতে ওই ধরনের প্রযুক্তিগত সমাধানসূত্র তৈরি করে সারা পৃথিবীতে তা ছড়িয়ে দেওয়ার।”

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের মতে, নতুন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউসে পা রাখার আগে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় এইচ-১বি, এল-১ ইত্যাদি ভিসা নিয়ে কড়াকড়ির কারণে বেশ অসুবিধার মুখে পড়তে হয়েছে দেশের প্রায় সমস্ত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে সদ্য নির্বাচিত জো বাইডেন ওই কড়াকড়ি শিথিল করার কথা বলেছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভিসার কোটা তুলে দেওয়ার। কিন্তু তা করার সময়ে ওই ভিসা নিয়ে পাওয়া কাজের ন্যূনতম বেতন কিংবা দক্ষতার মাপকাঠি আরও উঁচুতে বেঁধে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। বিশেষত যেখানে প্রাক্তন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়েও ওই ভিসায় কড়াকড়ির কথা প্রায় শোনা যেত। আর তখন ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন বাইডেনই। তাই অনেকের ধারণা, এ দিন আসলে জোড়া বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদী।

Advertisement

আরও পড়ুন: শৌচাগার: মোদীর ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন

প্রথমত, বাইডেনের সঙ্গে ফোনে কথা হওয়ার পরেই প্রধানমন্ত্রী এ দিন মনে করিয়ে দিয়েছেন, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে সব থেকে দক্ষ কর্মীর জোগানদার ভারতই। দ্বিতীয়ত, এখনও এ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প অনেকখানি আউটসোর্সিং নির্ভর। ৬০-৭০ শতাংশ ব্যবসার জন্যই তাকে তাকিয়ে থাকতে হয় আমেরিকা ও ইউরোপের সংস্থাগুলির বরাতের দিকে। বিদেশি বরাত নির্ভরতা কমিয়ে সেই ছবি পাল্টাতে এ দিন তাই দেশের মাটিতে প্রযুক্তিগত সমাধান খোঁজায় জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে ভারতকে বিনিয়োগের পছন্দের গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরতে বলেছেন দক্ষ মানবসম্পদ, বিশাল বাজার, ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়ার’ কথা। দাবি করেছেন, তাঁর সরকারের মূল মন্ত্র, ‘প্রযুক্তিই প্রথম’।

আরও পড়ুন: মোদীর বই-টুইটে উৎসাহের ঢল

কিন্তু বিরোধী শিবিরের দাবি, লগ্নি টানতে যে বিপুল সম্ভাবনাময় বাজারের কথা প্রধানমন্ত্রী নিয়ম করে বলেন, সেখানে আজ অনেক দিনই চাহিদা তলানিতে। কাজের বাজারে ঘোর অনিশ্চয়তার প্রতিফলন কেনাকাটায় রাশে। বৃদ্ধির হার তথৈবচ। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির টুইট, “রফতানিতে ধাক্কা আর মূল্যবৃদ্ধির চড়া হারের সাঁড়াশি আক্রমণে ক্রমশ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনাতেও পিছিয়ে পড়ছে ভারতের অর্থনীতি।” এই পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পেও নতুন লগ্নি কতটা আসবে, সে বিষয়ে সংশয়ী বিরোধীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন