Narendra Modi

Narendra Modi: তৃণমূলের প্রচারে প্রভাবিত হয়ে ফাঁদে পা নয়, গোয়া ও উত্তরপ্রদেশে বার্তা মোদীর

সব হিন্দু ভোট যাতে বিজেপির বাক্সেই পড়ে তা নিশ্চিত করতে আজ উত্তরপ্রদেশের কানপুরের জনসভায় তৃণমূলকে নিশানা করেন মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৩১
Share:

বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পঞ্জাবের জনসভায় বক্তব্য রাখছেন নরেন্দ্র মোদী। সোমবার জালন্ধরে। ছবি পিটিআই।

গোয়ায় হিন্দু ভোট বিভাজন করাই তৃণমূল কংগ্রেসের লক্ষ্য— এই অভিযোগ তুলে আজ একই সঙ্গে গোয়া ও উত্তরপ্রদেশের মানুষকে তৃণমূলের প্রচারে প্রভাবিত না হওয়ার পরামর্শ দিলেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

আজ ভোট ছিল দুই রাজ্যেই। দু’রাজ্যেই হিন্দু ভোটের বিভাজন রুখতে তৎপর হন প্রধানমন্ত্রী। সব হিন্দু ভোট যাতে বিজেপির বাক্সেই পড়ে তা নিশ্চিত করতে আজ উত্তরপ্রদেশের কানপুরের জনসভায় তৃণমূলকে নিশানা করেন মোদী। গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বক্তব্যের সমালোচনা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘গোয়ায় এখন ভোট চলছে। কিন্তু আমি গোয়ার ভোটারদের জানাতে চাই যে প্রথম বার লড়তে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের এক নেত্রী সেখানে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কারণ হিসাবে জানিয়েছেন, হিন্দু ভোটকে ভাগ করতেই তাঁরা লড়াইয়ে নেমেছেন। তৃণমূল ওই রাজ্যে মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির সঙ্গে জোট করেছে। আর তৃণমূলের লক্ষ্যই হল হিন্দু ভোটকে বিভাজন ঘটিয়ে বিজেপিকে হারানো। বিষয়টি কমিশনের খতিয়ে দেখা উচিত।’’

বিজেপির অভিযোগ, ওই রাজ্যেই হিন্দু ভোট মূলত তাঁদের দল অথবা গোমন্তক দল পেয়ে থাকে। কিন্তু এ যাত্রায় ওই ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতেই গোমন্তক দলের শরিক তাঁরা হয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন মহুয়া। যাতে তৃতীয় দল হিসাবে হিন্দু ভোটে ভাগ বসাতে পারে তৃণমূল। কারণ তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করেন, যত হিন্দু ভোট ভাগ হবে তত জেতার প্রশ্নে পিছিয়ে পড়বেন বিজেপি প্রার্থীরা। ঠিক একই যুক্তি প্রযোজ্য ভোটমুখী পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ক্ষেত্রেও। ওই এলাকার অনেক আসন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত হলেও গত কয়েকটি ভোটে শুধু হিন্দু ভোট এক জোট হওয়ার কারণে জিতেছিল পদ্মশিবির। কিন্তু এ বার বাতাসে বিরোধিতার গন্ধ স্পষ্ট পাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। তাই আজ কানপুরের জনসভা থেকে একই সঙ্গে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার ভোটার ও গোয়ার নাগরিকদের হিন্দু ভোটের বিভাজন রুখতে বার্তা দেওয়ার কৌশল নেন মোদী।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীকে আজ পাল্টা জবাব দিয়ে মহুয়া বলেন, ‘‘গেরুয়া সাহেবরা নিজেদের পছন্দ মতো সত্যকে পাল্টাতে ওস্তাদ। তবে আমি খুশি যে এমন ম্যাড়ম্যাড়ে ভ্যালেন্টাইন দিবসে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ট্রোল-সেনাকে উত্তেজিত করার জন্য কিছু বিষয় দিতে পেরেছি।’’

শুধু মোদী নন. তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আজ নিশানা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। এ বারের নির্বাচনে ইতিমধ্যেই সমাজবাদী পার্টির হয়ে প্রচারে লখনউ সফর করেছেন মমতা। পরে প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে প্রচার করার পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। তাঁর এই তৎপরতাকে ভাল ভাবে দেখছে না বিজেপি। সম্প্রতি কেরল ও বাংলার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের তুলনা টেনে আনার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আজ যোগী বলেন, ‘‘বাংলা থেকে ব্যক্তিরা এসে এ রাজ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। সে কারণেই রাজ্যের মানুষদের সতর্ক করার প্রয়োজন ছিল। কারণ রাজ্যের মানুষ যে নিরাপত্তা, সম্মান পাচ্ছেন তা নষ্ট করতেই বাইরে থেকে লোক আসছে।’’

পশ্চিমবঙ্গে ভোটের পরেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের সমর্থকদের উপর হামলা, মারধরের অভিযোগে সরব বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। সেই উদাহরণ টেনে আদিত্যনাথ বলেন, ‘‘ওঁদের (তৃণমূলের) কাছে জানতে চাই বাংলায় কি শান্তিতে নির্বাচন হয়েছিল? সদ্য হয়ে যাওয়া বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা হয়েছিল। বুথ লুট হয়েছিল। রাজ্যে বিশৃঙ্খলা চরমে। একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল নির্বাচনে। ঠিক একই চিত্র দেখা গিয়েছে কেরলেও। যে পরিমাণ হিংসাত্মক ঘটনা ও রাজনৈতিক হত্যা ওই দুই রাজ্যে হয়ে থাকে তা কি দেশের অন্যত্র কোথাও হয়?’’ একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা টেনে তিনি বলেন, রাজ্যে প্রথম দফা নির্বাচন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হয়েছে। সেই তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের তুলনা করে দেখুন। যোগীর যুক্তি নস্যাৎ করে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘যে রাজ্যে উন্নাও, হাথরসের মতো ঘটনা ঘটে, সেখানের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড়াই করা শোভা পায় না। আর মা ফ্লাইওভারের ছবি ব্যবহার থেকেই স্পষ্ট যোগী রাজ্যে সত্যিকারের উন্নয়ন আদৌ কতটা হচ্ছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন