রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: রয়টার্স।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন, তাতে কাজ হচ্ছে। ভারত চাপ দিচ্ছে রাশিয়াকে। এমনটাই দাবি করলেন আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোর প্রধান মার্ক রুটে। তিনি জানিয়েছেন, ট্রাম্প ভারতের পণ্যে শুল্ক আরোপ করায় রাশিয়ার উপর তার ‘বড় প্রভাব’ পড়ছে। শীঘ্র ইউক্রেন সমস্যার সমাধান হতে পারে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন রুটে। সেখানে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘ভারতের উপর ট্রাম্পের শুল্ক চাপানোর বড় প্রভাব পড়ছে রাশিয়ায়। দিল্লি থেকে পুতিনকে ফোন করা হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী তাঁকে ইউক্রেন নিয়ে প্রশ্ন করছেন। ইউক্রেন সম্বন্ধে পুতিনের অবস্থান জানতে চাইছেন বার বার। কারণ, শুল্ক চাপানো হয়েছে ভারতের উপর।’’
রাশিয়া থেকে খনিজ তেল কেনার ‘শাস্তি’ হিসাবে ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়েছেন ট্রাম্প। দাবি করেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়া যে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, তার মূলে রয়েছে ভারতের এই বাণিজ্য নীতিই। ভারতের তেল কেনার টাকাতে রাশিয়া যুদ্ধের খরচ বহন করছে। নয়াদিল্লি অবশ্য এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে। জানিয়েছে, ভারতের বাণিজ্যনীতি স্থির হয় আন্তর্জাতিক বাজারদর এবং জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে। এ ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে। অন্যান্য দেশ রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে গেলেও কেন তাদের উপর কোনও শাস্তিমূলক শুল্ক চাপায়নি হোয়াইট হাউস, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
শুল্ককে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ত হচ্ছিল। গত মাসে ট্রাম্প আবার সুর নরম করেন। জানান, বাণিজ্য নিয়ে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার আলোচনা চলছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। একই ভাবে মোদী তার জবাব দিয়েছেন বন্ধুত্বপূর্ণ ভঙ্গিতে। ফলে দূরত্ব কিছুটা কমার ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও এখনও আমেরিকা শুল্ক হ্রাস করেনি। ভারত ও আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে এই শুল্কের প্রভাব পড়ছে।
ট্রাম্পের শুল্ক জারি করার পর রাশিয়া এবং চিনের সঙ্গে নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে মোদী চিনে গিয়েছিলেন। সেখানে শি জিনপিং এবং পুতিনের সঙ্গে আলাদা করে তাঁর বৈঠকও হয়। ভারতের উপর চড়া হারে মার্কিন শুল্কের বিরোধিতা করেছেন পুতিন। এর মধ্যেই নেটো প্রধান দাবি করলেন, ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার নীতি জানতে মোদী ফোন করছেন পুতিনকে। মার্কিন শুল্কের চাপ কমাতে পাল্টা চাপ দিচ্ছেন মস্কোকে। যদিও দিল্লি বা মস্কোর তরফে এ বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।