হাজারিবাগের সভায় নরেন্দ্র মোদী, ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মূ, মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। ছবি: চন্দন পাল।
ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গের মতো পূর্ব ভারতের কয়েকটি রাজ্যকে সঙ্গে নিয়ে ‘দ্বিতীয় কৃষি বিপ্লব’-এর পথে এগোতে চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আজ হাজারিবাগের বরহীতে ‘কৃষি অনুসন্ধান সংস্থা’র শিলান্যাস অনুষ্ঠানে এমনই মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জনসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু কমছে কৃষিযোগ্য জমির পরিমাণ। ভবিষ্যতে এ নিয়ে কোনও সঙ্কট রুখতে কৃষিতে বিপ্লব আনতেই হবে। সে জন্য চাষবাসে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আরও বেশি করে প্রয়োগ করা জরুরি।’’
তার দিশাও দেখান প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, মাটি পরীক্ষা করে ‘সয়েল হেলথ কার্ড’ তৈরি করা হবে। জমিতে চাষের আগে ওই কার্ড দেখে বোঝা যাবে, সেখানে কী ধরনের ফসলের চাষ করা উচিত। তাতে কতটা জল, সার লাগবে— তা লেখা থাকবে সয়েল-কার্ডেই। এতে ফলন ভাল হবে। লাভ হবে কৃষকদের।
সয়েল কার্ডের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের খোঁজও দেন মোদী। তিনি জানান, কার্ড তৈরির জন্য জেলায় জেলায় ছোট ছোট গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করা হবে। সেখানে কাজ পাবেন এলাকার তরুণ-তরুণীরা। কৃষকদের জন্য নতুন টিভি চ্যানেলের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই চ্যানেল অনেকটা মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো। তা দেখে উপকৃত হচ্ছেন দেশের অগণিত চাষিভাই।’’
এ দিন প্রধানমন্ত্রীকে এক ঝলক দেখতে শুধু বরহীর বাসিন্দারাই নন, কিলোমিটার দশেক দূরের বিহারের গয়া থেকেও ভিড় এসেছিল। মোদীর কথা শুনতে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেছিলেন বছর পঁয়ষট্টির রঘু সোরেন। তিনি জানান, হাজারিবাগে সেচের জল কৃষির সব চেয়ে বড় সমস্যা।
তার বিঘাচারেক জমিতে জলের জন্য তাই তাকিয়ে থাকতে হয় আকাশের জলভরা মেঘের দিকে। রঘুর আক্ষেপ, ‘‘ঠিকমতো জল পেলে সারা বছর জমিতে হরেক ফসল ফলাতে পারতাম। সেই সুযোগ না থাকায় মরসুমের পর চায়ের দোকান খুলতে হয়েছে।’’ তাঁর মতো এলাকার অন্য চাষিদের আর্তি, প্রশাসন আগে জলের সমস্যা মেটাক। তারপর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করা যাবে।
দুপুর পৌনে ১২টায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস, রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মূকে সঙ্গে নিয়ে বরহীর মাটিতে নামে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার। আকাশে কপ্টার দেখে হাততালিতে ফেটে পড়েন হাজার চল্লিশ দেহাতি মানুষ।