প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পিটিআই-এর ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন-সফরের সাফল্যকে তুলে ধরতে যখন মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি, তখনই তাকে পরোক্ষে কিছুটা কটাক্ষ করল কেন্দ্রে এনডিএ জোটের শরিক শিবসেনা।
প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশে ফেরার আগেই, তাঁকে ‘খোঁচা’ দিল শিবসেনা।
তাদের দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’-র সম্পাদকীয়তে লেখা হল, ‘মোদী জনপ্রিয় ঠিকই। আমেরিকায় যেখানেই গিয়েছেন, সেখানে সকলেই তাঁকে ‘মোদী মোদী’ বলে সম্বর্ধনা জানিয়েছে। কিন্তু, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ও ইন্দিরা গাঁধীও তো কিছু কম জনপ্রিয় ছিলেন না। নেহরু-ইন্দিরার সময় অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ার এত বাড়াবাড়ি ছিল না।’
‘নেট-স্যাভি’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর স্বভাবসুলভ ঢঙে এ বারও তাঁর মার্কিন-সফরের ছবি ‘পোস্ট’ করেছেন ফেসবুক-টুইটারে।
‘সামনা’র সম্পাদকীয়তে অন্তত এটুকু স্পষ্ট, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ‘বাড়াবাড়ি’টা শিবসেনার তেমন ‘পছন্দ’ হয়নি!
তাই, রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক থেকে যতই ‘অপছন্দে’র হোক, দুই প্রাক্তন কংগ্রেসী প্রধানমন্ত্রী পামুলাপর্তি বেঙ্কট নরসিমা রাও ও মনমোহন সিং-এর ভূয়সী প্রশংসা করতেও পিছপা হয়নি শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’।
সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘বিদেশের সর্বত্রই প্রধানমন্ত্রী মোদীর জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। কিন্তু, এটা আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না যে, ভারতের অর্থনৈতিক প্রগতির ভিতটা গড়েছিলেন মনমোহন সিং ও নরসিমা রাওই। গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময় তাঁরা দেশকে অর্থনেতিক প্রগতির দিশা দেখিয়েছিলেন। তার রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছিলেন। টেলিকম ও তথ্য-সম্প্রচারের ক্ষেত্রে রীতিমতো বিপ্লব ঘটে গিয়েছিল ইন্দিরা গাঁধীর জমানায়। রাজীব গাঁধী তার গতি আরও বাড়িয়েছিলেন।’
হতেই পারে, এতটা লেখার পর ‘সামনা’র সম্পাদকীয়-লেখকের ‘বোধোদয়’ হয়, মনমোহন সিং ও নরসিমা রাও, দু’জনেই শিবসেনার প্রতিপক্ষ!
তাই, এর পরেই তার উল্লেখ আসে সম্পাদকীয়তে। যেখানে লেখা হয়েছে, ‘এই দুই ব্যাক্তিত্ব আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হতে পারেন, কিন্তু, এ ব্যাপারে তাঁদের অবদানকে তো আর আমরা অস্বীকার করতে পারি না। ওঁরা দু’জন যে সরকারগুলির মাথায় থেকে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন, মাথায় রাখতে হবে, সেই জোট-সরকারগুলি ছিল কিন্তু, অনেক বেশি নড়বড়ে।’
যেন এর পরেও, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে মনে করিয়ে দেওয়া হল, এখনকার এনডিএ জোট অতটা নড়বড়ে নয় আর শরিকেরা মোদীর পাশে রয়েছেন, আন্তরিক ভাবেই!