মিলছে না তথ্য, সংঘাতের নয়া ক্ষেত্র ব্রহ্মপুত্র

প্রবল স্নায়ুযুদ্ধের পরে ডোকলাম নিয়ে উত্তেজনা এখন থিতিয়ে গিয়েছে। তবে ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘাতের নতুন ক্ষেত্র হিসেবে সামনে চলে আসছে ব্রহ্মপুত্র নদ। সময় পেরিয়ে গেলেও ব্রহ্মপুত্র এবং শতদ্রু নদীর জলপ্রবাহ সংক্রান্ত কোনও তথ্য ভারতকে দিচ্ছে না বেজিং।

Advertisement

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫৮
Share:

প্রবল স্নায়ুযুদ্ধের পরে ডোকলাম নিয়ে উত্তেজনা এখন থিতিয়ে গিয়েছে। তবে ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘাতের নতুন ক্ষেত্র হিসেবে সামনে চলে আসছে ব্রহ্মপুত্র নদ। সময় পেরিয়ে গেলেও ব্রহ্মপুত্র এবং শতদ্রু নদীর জলপ্রবাহ সংক্রান্ত কোনও তথ্য ভারতকে দিচ্ছে না বেজিং। আপাতত একে নিরীহ সমস্যা মনে করা হলেও, নয়াদিল্লির আশঙ্কা, আস্থার এই চিড় থেকে অচিরেই বড়মাপের কূটনৈতিক ফাটল তৈরি হতে পারে।

Advertisement

চিনের সঙ্গে ভারত এবং বাংলাদেশের চুক্তি অনুযায়ী, ১৫ মে থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে প্রতি মাসে হাইড্রোলজিক্যাল পরিসংখ্যান ভাটিতে থাকা বাংলাদেশ এবং ভারতকে দেবে চিন। যা কিনা বন্যার পূর্বাভাসে এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। কিন্তু কূটনৈতিক সূত্রের খবর, এই তথ্য নিয়মিত ভাবে বাংলাদেশকে দেওয়া হলেও, ভারতকে অন্ধকারেই রেখেছে বেজিং। অথচ গত বর্ষায় ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যার ফলে ভেসে গিয়েছিল অসম। রাজ্যের ২৯ টি জেলা জলমগ্ন থেকেছে, মারা গিয়েছেন ১৬০ জন। তখনই ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছিল, চাওয়া সত্ত্বেও এই নদের জলপ্রবাহ সংক্রান্ত তথ্য দিচ্ছে না বেজিং।

আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার পথে টিপুর পরিবার

Advertisement

ডোকলাম সংঘর্ষ চলার কারণে বিষয়টি নিয়ে বিশদে মুখ খোলেনি নয়াদিল্লি। এ নিয়ে বেজিং-এর উপর সে ভাবে চাপও তৈরি করা যায়নি। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ডোকলাম সমস্যার সমাধান হয়ে গেলেও, ব্রহ্মপুত্র নিয়ে রা কাড়ছেন না চিনা নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে ভারত সম্প্রতি কূটনৈতিক ভাবে উদ্যোগী হওয়ায় চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং গত সপ্তাহে বলেছেন, গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাইড্রোলজিক্যাল স্টেশনগুলি নতুন করে নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজের কারণেই চিন তথ্য সংগ্রহের অবস্থায় নেই। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে জানাচ্ছেন, কয়েক দিন আগেও চলতি মরসুমে ব্রহ্মপুত্রের জলের উচ্চতা ও জল ছাড়ার পরিমাণের তথ্য চিন থেকে তাঁরা পেয়ে চলেছেন। বাংলাদেশের জলসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মোহাম্মদও একই কথা জানিয়েছেন।

দীর্ঘদিনের প্রয়াসের পরে ২০০৬ সালে ভারত এবং চিনের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের জলপ্রবাহের তথ্য ভাগাভাগির চুক্তি হয়। ভারত শুখা মরসুমেও জলপ্রবাহের তথ্য চেয়েছিল। কারণ সাউথ ব্লকের আশঙ্কা, শুখার সময়ে বেশি করে জল ধরে রাখবে চিন, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত।
চিন যদিও মুখে বলছে, তারা ভাটিতে থাকা দেশগুলির ক্ষতি করে জলসংগ্রহ বা ব্রহ্মপুত্রের দিক পরিবর্তন করবে না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের আশঙ্কা, চিন আচমকাই ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক পরিমাণ জল ছেড়ে দিতে পারে। অসমের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেখানে খুব কম সময়ের মধ্যে জলের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া ও কমার বিষয়টি নজরে পড়ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement