Mobile Phone

আয় বাড়াতে মরিয়া টেলিকম সংস্থাগুলি, নতুন বছরে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে মোবাইল ব্যবহারের খরচ

মর্গান স্ট্যানলি জানিয়েছে, ভারতে টেলিকম শিল্পের আর্থিক হাল ফেরানোর একমাত্র পথ মাসুল বৃদ্ধি। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, এর আগে সংস্থাগুলিও বিভিন্ন সময় একই কথা বলেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:২১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

জীবনযাপনের জন্য জরুরি সব কিছুর পিছনেই খরচ আগের থেকে অনেকটা বেড়েছে সাধারণ মানুষের। এ বার তাঁদের বোঝা আরও ভারী হওয়ার ইঙ্গিত মিলল। বিশেষজ্ঞ সংস্থা মর্গান স্ট্যানলি সোমবার জানাল, নতুন বছরে ভারতে বাড়তে পারে মোবাইলের খরচ। সব ক’টি টেলিকম সংস্থাই আয় বাড়াতে মরিয়া। তাই মাসুল চড়তে পারে ১৬-২০ শতাংশ। সে ক্ষেত্রে প্রি-পেড এবং পোস্ট-পেড, দু’ক্ষেত্রেই গ্রাহকের খরচ বাড়বে। সূত্রের অবশ্য দাবি, এয়ারটেল এবং ভোডাফোন আইডিয়া (ভি) ইতিমধ্যেই কয়েকটি রিচার্জ প্রকল্পের মাসুলবাড়িয়ে দিয়েছে।

মর্গান স্ট্যানলি জানিয়েছে, ভারতে টেলিকম শিল্পের আর্থিক হাল ফেরানোর একমাত্র পথ মাসুল বৃদ্ধি। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, এর আগে সংস্থাগুলিও বিভিন্ন সময় একই কথা বলেছিল। বিশেষত ৫জি পরিষেবা চালু করতে গিয়ে যেহেতু অনেকখানি খরচ বেড়েছে তাদের। উপদেষ্টা সংস্থাটির দাবি, প্রতিটি সংস্থা গ্রাহক পিছু গড় আয় (আরপু) দু’তিন বছরে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করতে চাইছে। না হলে দীর্ঘ মেয়াদে তাদের টিকে থাকা কঠিন হবে। এখন এই নিরিখে শীর্ষে এয়ারটেল। জুলাই-সেপ্টেম্বরে তা ছিল ২৫৬ টাকা। জিয়োর ২১১.৪ টাকা, ভি-র ১৮০ টাকা আর রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থা বিএসএনএলের ৯২ টাকা।

শিল্প সূত্রের দাবি, এর মধ্যেই ভি এক বছরের জন্য ১৯৯৯ টাকার রিচার্জ প্রকল্পে মাসুল বাড়িয়ে ২২৪৯ টাকা করেছে। ৫০৯ টাকার প্রকল্প হয়েছে ৫৪৮ টাকা। এয়ারটেলের ১৮৯ টাকা এখন ১৯৯। বিএসএনএল বেশ কিছু রিচার্জ প্রকল্পে দাম এক রেখে মেয়াদ কমিয়েছে। রিলায়্যান্স জিয়ো এখনও মাসুল বদলায়নি। তবে নতুন বছরে বদলাতে পারে। বাকি সংস্থাগুলিও প্রায় সমস্ত প্রি-পেড এবং পোস্ট-পেড প্রকল্পের দাম বাড়াবে।

মর্গান স্ট্যানলি রিপোর্টে বলেছে, ২০১৯, ২০২১ ও ২০২৪— তিন বছর মাসুল বেড়েছে যথাক্রমে ১৫%-৫০%, ২০%-২৫% এবং ১০%-২০%। এ বার ২০২৬-এ বাড়তে পারে ১৬%-২০%। লক্ষ্য, ২০৩১-৩২ অর্থবর্ষের মধ্যে আরপু ৩৭০-৩৯০ টাকায় নিয়ে যাওয়া। ফলে এখন থেকে প্রতি বছরই ১০%-১৫% মাসুল বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়। প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে এগিয়ে এয়ারটেল। ৫-৭ বছরের মধ্যে গ্রাহক পিছু গড় আয় ৪০০ টাকা ছুঁতে পারে।

সম্প্রতি এয়ারটেলের শীর্ষকর্তা গোপাল ভিত্তল দাবি করেন, যে দেশগুলিতে মোবাইল মাসুল এখনও কম, তার মধ্যে ভারত অন্যতম। ফলে এই হার বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। একই বক্তব্য ভি-র সিইও অভিজিৎ কিশোরের। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, মোবাইল এখন বেশির ভাগ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অত্যাবশ্যক পণ্য। ফলে মাসুল বৃদ্ধির এই দৌড়ে ভুগতে হবে তাঁদেরই। বিশেষ করে স্বল্প এবং সাধারণ রোজগেরেদের।

বিএসএনএলের কলকাতা সার্কলের এক প্রাক্তন কর্তার কথায়, ‘‘সাধারণ মানুষ একেই মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার। তার উপর এ ভাবে ঘন ঘন মোবাইল ফোনের মাসুল বৃদ্ধি তাঁদের আরও বেশি সমস্যায় ফেলছে। আর মোবাইল ব্যবহারের সুযোগে সংস্থাগুলি তাদের পকেট ভরছে।’’ মর্গান স্ট্যানলির অবশ্য দাবি, ৪জি-র পরে ৫জি এবং ৬জি পরিষেবা চালু করার জন্য সংস্থাগুলির খরচ বেড়েছে। আরও বাড়বে। আর্থিক ভাবে চাঙ্গা থাকতে তাই মাসুল বৃদ্ধি ছাড়া উপায় নেই। কারণ, ইতিমধ্যেই বকেয়া মকুবের আর্জি জানিয়ে ভি এবং এয়ারটেল সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। মাসুল না বাড়ালে বকেয়া মকুব নিয়ে আবেদন বাড়তেই থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন