বিমানে অভব্য বা খারাপ আচরণ করলে এ বার সেই যাত্রীর উপর জারি হবে নিষেধাজ্ঞা। শাস্তির তালিকাকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী অশোক গণপতি রাজু জানিয়েছেন সহযাত্রীদের প্রতি অশালীন অঙ্গভঙ্গি, কটূক্তি করা বা মদ্যপ অবস্থায় অশান্তি করলে তা ‘লেভেল ১’ তালিকাভুক্ত হবে। সে ক্ষেত্রে তিন মাস পর্যন্ত ওই ব্যক্তির উপর উড়ানে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।
শারীরিক ভাবে আঘাত করা অবাঞ্ছিত ভাবে গায়ে হাত দিলে তা ‘লেভেল ২’ আওতায় আসবে। সে ক্ষেত্রে যাত্রী দোষী সাব্যস্ত হলে নির্দেশিকা অনুযায়ী ওই ব্যক্তির উপর ছ’মাস পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
উড়ানে কাজকর্মে বাধার সৃষ্টি করলে বা কোনও যাত্রীর আচরণে কারও প্রাণ সংশয় হলে বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে তা ‘লেভেল ৩’ অপরাধ বলে গণ্য হবে। সে ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত যাত্রী অন্তত দু’বছর বিমানে উঠতে পারবেন না। সর্বোচ্চ কত দিন এই নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে তা উল্লেখ করা হয়নি।
বিমান সংস্থার দায়ের করা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জেলা আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বাধীন একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করা হবে। ঘটনার ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
ওই নির্দেশিকায় শুধুমাত্র বিমান সংস্থাই নয়, যাত্রীদের অভিযোগও যাতে গুরুত্ব পায় সে দিকও উল্লেখ রয়েছে। বিমান সংস্থার অভিযোগ বা নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন সংশ্লিষ্ট যাত্রী। কেন্দ্র জানিয়েছে, অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে উড়ানে নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি দোষী সাব্যস্ত যাত্রীর উপর আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী অশোক গণপতি রাজু জানিয়েছেন, আলোচনার পরেই নতুন নির্দেশিকার নিয়মগুলি চালু করা হবে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি নতুন নির্দেশিকার নিয়মগুলি খুব ভাল ভাবেই গ্রাহ্য করা হবে।’’ যাত্রীরাও এই বিষয়ে নিজেদের মতামত জানাতে পারেন।
বিমান ছাড়ার আগে অথবা উড়ানে কোনও যাত্রীর আচরণ সহযাত্রীদের কাছে আশঙ্কাজনক হলে বা তা যদি উড়ানের ‘স্বাভাবিক কাজকর্মে’ বাধার সৃষ্টি করে তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে যাত্রী তালিকা থেকে বাদ দিতে পারে বিমান সংস্থা। পরের বার ওই বিমান সংস্থার উড়ানে উঠতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে ওই সংস্থা।
বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিংহ বলেছেন, যাত্রী সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা সরকারের প্রাথমিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এত দিন যাত্রী নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে কেন্দ্রের তরফে কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশিকা ছিল না। এ বার সেই পথেই এগোচ্ছে সরকার।
গত মার্চেই পুণে থেকে দিল্লি আসার পথে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে বিমানকর্মীকে চটিপেটা করে শিরোনামে এসেছিলেন শিবসেনা সাংসদ রবীন্দ্র গায়কোয়াড়। ওই কর্মীকে ২৫ বার জুতোপেটা করার অভিযোগে সাংসদকে সাময়িক ভাবে যাত্রী-তালিকা থেকে বাদ দেয় এয়ার ইন্ডিয়া এবং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স (এফআইএ)। পরে সংসদে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি।
গত জুনে, বিমানবন্দরে অভব্য আচরণের জন্য নাম জড়িয়েছিল তেলুগু দেশম সাংসদ জেসি দিবাকর রেড্ডির বিরুদ্ধে। তিনি বিশাখাপত্তনম বিমানবন্দরে ঢুকে কর্মীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ এবং অফিসের প্রিন্টার ভাঙচুর করেছিলেন বলে অভিযোগ।