নতুন বছরের প্রথম দিনে কামাখ্যা মন্দিরে ভক্তদের জমায়েত। ছবি: পিটিআই
নিজস্ব পরম্পরায় ইংরেজি নতুন বছরকে স্বাগত জানাল শিলচর। নববর্ষকে স্বাগত জানাতে তিন দিন ধরে চলছে বাংলা গানের আসর। সঙ্গে পিঠাপুলির পসরা। গাঁধীবাগে পৌষমেলার আয়োজন করেছে পুরসভা। জেলা ক্রীড়া সংস্থা প্রাঙ্গণে গানমেলা বসিয়েছে সমকাল ও স্বরলিপি নামে দুই সাংস্কৃতিক সংগঠন।
পুরনোকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরের বরণে গত রাতে দুই জায়গাতেই বেশ ভিড় ছিল। পৌষমেলায় মূলত স্থানীয় শিল্পীদের নাচ-গান হয়। লোকগীতি, লোকনৃত্য বিশেষ গুরুত্ব পায়। পুরসভা নিয়ম মেনে রাত ৯টায় অনুষ্ঠান শেষ করে। গানমেলা চলে মাঝরাত পর্যন্ত। ঠিক ১২টায় ধামাইলে বরণ করা হয় ২০১৭-কে। অংশ নেন বাংলাদেশ এবং কলকাতার অতিথিশিল্পীরাও। পিঠাপুলির দোকানের সমস্ত জিনিস অবশ্য রাত বাড়ার আগেই শেষ হয়ে যায়। চোঙ্গা পিঠা, নানা রকমের পায়েসের সঙ্গে ঘুগনি, সন্দেশও মেলে মেলায়। গাঁধীবাগে আজ বিশেষ আকর্ষণ ছিল পিঠেপুলি তৈরির পুরস্কার বিতরণ। বাসনা চৌধুরী, চন্দনা পুরকায়স্থ ও মহুয়া চৌধুরীকে বিচারক মনোনীত করা হয়। তাঁরা সকলের তৈরি খাদ্যসামগ্রী চেখে দেখেন। পরে প্রথম তিন জনের নাম ঘোষণা করা হয়। পুরসভার সভাপতি নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর তাঁদের পুরস্কৃত করেন।
শিলচরে পৌষমেলার শুরু ২০১০ সালে। শুক্রবার পৌষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুরসভার সভাপতি নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর জানান, তাঁরা ক্ষমতায় এসে নিজস্ব সংস্কৃতির কথা ভেবে তাকে জমজমাট করে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। এ বার মেলাপ্রাঙ্গণকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হয়। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন, বিজেপি নেতা রাজদীপ রায়ও এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেন। পৌষমেলা আয়োজনে শুরু থেকে জড়িত বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা সমিতির সম্পাদক পরিতোষ দে বলেন, দিনদিন সাড়া বাড়ছে। সঙ্গে রুচির পরিবর্তনও লক্ষণীয়। প্রথম দিকে ঘুগনিজাতীয় খাবার বেশি বিক্রি হতো। এখন শুধু পিঠেপায়েস খুঁজে বেড়ান মেলার দর্শনার্থীরা। একে ভাল লক্ষণ বলেই মনে করেন প্রাক্তন পুরকর্মী পরিতোষবাবু।
অন্য দিকে গানমেলার সাড়াতেও সন্তোষ ব্যক্ত করেন আয়োজকরা। গান শুনতে এসে দর্শনার্থীরা দেখেন পোড়ামাটির সামগ্রীর প্রদর্শনীও। ছিল বুটিকেরও বেশ কিছু দোকান।
অন্য দিকে, হাইলাকান্দিতে নববর্ষেই শুরু হল রবীন্দ্রমেলা। আজ রবীন্দ্রমেলার মাঠে বসে মেলা। মেলা কমিটির সভাপতি গৌতম রায় ৩৫-তম রবীন্দ্রমেলার উদ্বোধন করেন। তিনি জানিয়ে দেন, মেলা নিয়ে যাবতীয় ভূল বোঝাবুঝি কেটে গিয়েছে। হাইলাকান্দির জেলাশাসক মলয় বরা, পুলিশ সুপার প্রণবজ্যোতি গোস্বামী, সাংসদ রাধেশ্যাম বিশ্বাস, মেলা কমিটির কার্যকরী সভাপতি রাহুল রায়, দুই বিধায়ক আনোয়ার হুসেন লস্কর, নিজামউদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।