কাশ্মীরে পাক টাকা খুঁজবে এনআইএ

কখনও স্টিং অপারেশন, কখনও গোপন সূত্রের খবর, কখনও রেকর্ড করা টেলি-কথোপকথন সন্দেহটা উস্কে দিয়েছিল আগেই। অভিযোগ উঠেছিল, লস্কর-ই-তইবার আর্থিক মদতেই টানা অশান্তি চলছে কাশ্মীরে। আর লস্কর প্রধান হাফিজ সইদের পাঠানো সেই টাকা উপত্যকায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন হুরিয়ত নেতারা।

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০৩:৪৭
Share:

বারামুলায় সেনা অফিসারদের সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেটলি। কাশ্মীরে শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

কখনও স্টিং অপারেশন, কখনও গোপন সূত্রের খবর, কখনও রেকর্ড করা টেলি-কথোপকথন সন্দেহটা উস্কে দিয়েছিল আগেই। অভিযোগ উঠেছিল, লস্কর-ই-তইবার আর্থিক মদতেই টানা অশান্তি চলছে কাশ্মীরে। আর লস্কর প্রধান হাফিজ সইদের পাঠানো সেই টাকা উপত্যকায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন হুরিয়ত নেতারা। আজ সরকারি ভাবে সেই অভিযোগেরই তদন্ত শুরু করল এনআইএ। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি দল ইতিমধ্যেই শ্রীনগরে পৌঁছেছে। এনআইএ কারও নাম না বললেও সংবাদ সংস্থার দাবি, প্রাথমিক তদন্তে নেমে সৈয়দ আলি শাহ গিলানি-সহ চার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন গোয়েন্দারা।

Advertisement

জিএসটি বৈঠকের জন্য কেন্দ্রীয় অর্থ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অরুণ জেটলি এখন শ্রীনগরে। আজ সাংবাদিক বৈঠকে তিনিও বলেছেন, ‘‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সীমান্তের ও-পার থেকে আর্থিক মদত পাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।’’ গিলানির পাশাপাশি অন্য যে নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে তাঁরা হলেন নইম খান, গাজি জাভেদ বাবা এবং ফারুক আহমেদ দার ওরফে ‘বিট্টা কারাটে’। এই নইমকেই টিভি চ্যানেলের স্টিং অপারেশনে পাকিস্তানের টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করতে দেখা গিয়েছিল। এনআইএ-র এক কর্তা জানান, এডিজি ভিএসকে কৌমুদীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের যে তদন্তকারী দলটি কাশ্মীরে এসেছে, তাতে রয়েছেন এক জন ডিআইজি এবং দু’জন এসপি।

এনআইএ-র মুখপাত্র অলক মিত্তল আজ আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘হুরিয়ত নেতাদের মাধ্যমে সত্যিই পাকিস্তানের টাকা কাশ্মীরে ঢুকছে কি না, সেটাই তদন্ত করে দেখা হবে।’’ সূত্রের খবর, বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের জেরার জন্য তলব করতে পারে এনআইএ। তবে আপাতত এফআইআর দায়ের করছে না তারা। সেটা করা হবে কোনও প্রমাণ পাওয়া গেলে।

Advertisement

গত বছর হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে কাশ্মীর উপত্যকা। পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে হাতে পাথর নিয়ে পথে নামেন কাশ্মীরের যুবকেরা। তখনই অভিযোগ উঠেছিল, এর নেপথ্যে রয়েছে পাক মদত। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, লস্কর। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, মূলত হাওয়ালার মাধ্যমে হুরিয়ত নেতাদের ওই টাকা পাঠানো হতো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা কাশ্মীরে ঢুকিয়েছে পাকিস্তান। যা মূলত নিরাপত্তা বাহিনীর ওপরে পাথর ছোড়া, স্কুল ও সরকারি ভবনে আগুন লাগানোর জন্য যুবকদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আজ শ্রীনগরে জেটলি বলেন, ‘‘সমস্যাটার দু’টো দিক রয়েছে। যার সমাধান করতে এক দিকে প্রয়োজন বন্ধুত্বমূলক পদক্ষেপ। অন্য দিকটা সামলাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।’’ তাঁর বক্তব্য, কাশ্মীরের মানুষও সীমান্তপারের সন্ত্রাসের শিকার। সেনাবাহিনী তার যোগ্য জবাব দিচ্ছে। বস্তুত, এই সফরে নিয়ন্ত্রণরেখায় গিয়ে সেনা অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

এনআইএ-র এই তদন্ত শুরুর সময়েই বাড়তি অস্বস্তিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিক। নিজের বাড়িতেই এক মহিলা টিভি সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিককে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ইয়াসিনের পাল্টা দাবি, তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বিনা অনুমতিতেই তাঁর শোওয়ার ঘরে ঢুকে পড়েছিলেন ওই দুই সাংবাদিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন