প্রতীকী ছবি।
রাতের বেঙ্গালুরু শহর কি মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত নয়? না হলে হঠাত্ এমন আইন আনার কথা কেন ভাবা হচ্ছে?
সম্প্রতি কর্নাটক বিধানসভায় নারী ও শিশুকল্যাণ কমিটি এক প্রস্তাব পেশ করেছে। সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, শহরের তথ্যপ্রযুক্তি ও বায়োটেকনোলজি সংস্থাগুলিতে রাতের শিফ্টে যেন মহিলা কর্মী না রাখা হয়। মহিলাদের সুরক্ষা ও ব্যক্তিজীবনের কথা ভেবেই এই প্রস্তাব আনা হয়েছে বলে বিধানসভা সূত্রে খবর। মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা সরকার-পুলিশ-প্রশাসনের। কিন্তু, সেই সরকারই মূল সমস্যা থেকে পিছিয়ে এসে রাতের শিফ্টে মহিলাদের কাজ বন্ধ করার কথা বলছে? সরকারি ওই কমিটির প্রস্তাব নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠছে।
সোমবার এন এ হরিশের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি বিধানসভায় ৩২তম রিপোর্ট পেশ করে। তাতেই ওই প্রস্তাবনা আনা হয়েছে। রাতের শিফ্টে মহিলা কর্মীদের কাজ না করানোর পক্ষেই মত দিয়েছে কমিটি। কমিটির প্রস্তাব, বরং মহিলাদের সকাল বা দুপুরের শিফ্টে কাজ করানো হোক। কমিটির সদস্যেরা গত বছর ৬ সেপ্টেম্বর ইনফোসিস ও বায়োকনের মতো নামী সংস্থা পরিদর্শনে যান। সংস্থার কর্তৃপক্ষ-সহ বহু কর্মীদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেন তাঁরা। কমিটির দাবি, তাঁদের মতামতের উপর ভিত্তি করে ওই প্রস্তাবনা আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঋতুমতী অবস্থায় ধর্মস্থানে প্রবেশ অনুচিত, বিতর্কিত মন্তব্যে কংগ্রেস নেতা
কমিটির প্রস্তাব, রাতে নয়, বরং মহিলাদের সকাল বা দুপুরের শিফ্টে কাজ করানো হোক। প্রতীকী ছবি।
যদিও গত বছরই এ নিয়ে এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিদ্দারামাইয়া সরকার। ১৯৬১-র এক আইনে সংশোধনী এনে রাজ্যের সমস্ত শিল্পক্ষেত্রেই মহিলাদের রাতের শিফ্টে কাজের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে ওই আইনে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল মহিলাদের সুরক্ষা সংক্রান্ত একাধিক শর্তও। ওই আইনকে শিল্পমহল সদর্থক ভাবে নিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ কেন নয়া প্রস্তাব এনে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরতে চাইছে সরকার? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
মহিলাদের জন্য দেশের অন্যতম সুরক্ষিত শহর বেঙ্গালুরু অবশ্য মাস কয়েক আগেই সাক্ষী থেকেছে এক ন্যক্কারজনক ঘটনার। বর্ষবরণের রাতে একাধিক মহিলার যৌনহেনস্থার মতো ঘটনা ঘটে গিয়েছে এই শহরেই। তার পর দেশে-বিদেশে মুখ পুড়েছিল সরকারের। সেই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা নিয়েই কি সতর্ক হতে চায় সরকার? উঠছে প্রশ্ন।