নীরবদের ঘর ওয়াপসি খুবই কঠিন

নীরব ও তাঁর মামা মেহুলের পাসপোর্ট চার সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। তারা কোন দেশে রয়েছেন, তা হয়তো চিহ্নিতও করা যাবে। কিন্তু ওই পর্যন্তই।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৬
Share:

নীরব মোদী-মেহুল চোক্সী।

ব্যাঙ্ক থেকে ১১ হাজার কোটিরও বেশি টাকা লোপাট করে ফেরার হওয়া মামা-ভাগ্নেকে ফেরানোর সদিচ্ছা নরেন্দ্র মোদী সরকারের আছে কিনা, তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সদিচ্ছার বিষয়টি তো পরে। বিদেশ থেকে কোনও ভারতীয়কে ফেরানোর ব্যাপারে সাউথ ব্লকের রেকর্ড অত্যন্ত দুর্বল। সে কারণে মোদী সরকারের মন্ত্রীরা মুখে যতই তর্জনগর্জন করুন, নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীদের ‘ঘর ওয়াপসি’র সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

Advertisement

নীরব ও তাঁর মামা মেহুলের পাসপোর্ট চার সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। তারা কোন দেশে রয়েছেন, তা হয়তো চিহ্নিতও করা যাবে। কিন্তু ওই পর্যন্তই।

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, গত ১৬ বছরে যত জনকে বিদেশ থেকে ফেরানোর আবেদন করা হয়েছিল, তার অধিকাংশই খারিজ হয়ে গিয়েছে। যাদের ফেরানো গিয়েছে, তারাও কেউ সমাজের প্রভাবশালী অংশের নন। অধিকাংশই মৎস্যজীবী বা খুচরো অপরাধী। আবু সালেমের মতো কয়েক জন জঙ্গিকে ফেরানো গেলেও সে সব ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চাপ বা রাষ্ট্রপুঞ্জের বড় ভূমিকা থেকেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: অপরাধীদের মতো আচরণ করা বন্ধ করুন: তীব্র কটাক্ষে রাহুল

কিন্তু ললিত মোদী বা বিজয় মাল্যর মতো আর্থিক কেলেঙ্কারিতে যুক্তদের আজও ফেরানো যায়নি। ব্রিটেনের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি হয় ১৯৯২ সালে। তার পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র এক জনকেই ব্রিটেন থেকে ফেরাতে পেরেছে ভারত। তিনি গুজরাত দাঙ্গার সঙ্গে যুক্ত সমিরভাই ভিনুভাই পটেল। তাঁকে ফেরানো গিয়েছে, কারণ তিনি নিজেই আইনি লড়াইয়ের পথে না গিয়ে কার্যত আত্মসমর্পণ করেন। গত বছর অক্টোবরে ক্রিকেট গড়াপেটায় অভিযুক্ত সঞ্জীব চাওলার প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত ভারতীয় অনুরোধ খারিজ করেছে ব্রিটেন। ওই মাসেই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগে পলাতক জাতিন্দর ও আশা রানী আঙ্গুরালার প্রত্যর্পণের অনুরোধও ফিরিয়েছে তারা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে যে বিচারপতি এই দু’টি ক্ষেত্রে ভারতীয় আবেদন খারিজ করেছেন, এখন তাঁর হাতেই বিজয় মাল্যর প্রত্যর্পণ মামলা।

বেসরকারি টিভি চ্যানেলের রিপোর্ট অনুসারে, নীরব এখন নিউ ইয়র্কে। অনেকে এ-ও বলছেন, বেলজিয়ামের পাসপোর্ট থাকায় নীরব এখন সে দেশে। দু’ক্ষেত্রেই তাঁকে ফেরানো প্রায় অসম্ভব বলছে কূটনৈতিক শিবির। আমেরিকার সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকলেও এখনও পর্যন্ত সে দেশ থেকে মাত্র একজনকেই ফেরাতে পেরেছে নয়াদিল্লি। বেলজিয়ামের প্রত্যর্পণ চুক্তি সংক্রান্ত বিচার ব্যবস্থাও অত্যম্ত জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। সে দেশের আদালতে দেখা হয়, ওই ব্যক্তির অপরাধ দু’টি দেশের (অভিযুক্তের স্বদেশ ও বেলজিয়াম) আইনে কতটা দণ্ডনীয়। বিচার শেষ হতেই লেগে যায় বহু সময়। মানবাধিকার, রাজনৈতিক আশ্রয়ের মতো বিষয়গুলি গোটা প্রক্রিয়াকে আরও দীর্ঘায়িত করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন