হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী। ছবি- সংগৃহীত।
মুম্বইয়ের কুরলায় তাঁর বাড়ি সহ দিল্লি ও সুরাতে কোটি-কোটিপতি হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদীর নামে থাকা বিভিন্ন শো রুম ও অফিসে বৃহস্পতিবার জোর তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
ইডি-র তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, হিরে ব্যবসায়ী মোদীর যে ৯টি স্থাবর সম্পত্তিতে হানা দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে, কুরলায় তাঁর একটি বাড়ি, কালা ঘোড়ায় একটি জুয়েলারি বুটিক, দিল্লির চাণক্যপুরী আর ডিফেন্স কলোনিতে তাঁর দু’টি শো রুম। তবে হিরে ব্যবসায়ী মোদী বিদেশে লুকিয়ে রয়েছেন বলে ইডি-র দাবি।
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের মুম্বইয়ের একটি শাখায় প্রায় ১১ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এই অঙ্ক গত বছরে পিএনবি-র নিট লাভের আট গুণেরও বেশি।
অভিযোগ, পিএনবি-র অফিসাররাই হিরে ব্যবসায়ী মোদী ও তাঁর সঙ্গীদের নিয়ম ভেঙে বিশাল অঙ্কের ঋণ পাওয়ার গ্যারান্টি দেন। সেই নথি দেখিয়ে অন্যান্য ভারতীয় ব্যাঙ্কের বিদেশি শাখা থেকেও ধার নেন নীরব মোদী। গতকালই সিবিআই জানায়, হিরে ব্যবসায়ী মোদীর বিরুদ্ধে দু’টি লিখিত অভিযোগ তাদের কাছে জমা পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দাভোস সফরে ছিলেন হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী?
হালে দাভোস সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ছবিতে দেখা গিয়েছিল নীরব মোদীকে।
আরও পড়ুন- বিপুল টাকার জালিয়াতি মুম্বইয়ের পিএনবি শাখায়
কী ভাবেই বা বিদেশে গিয়ে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন হিরে ব্যবসায়ী, তা নিয়ে যখন জল্পনা তুঙ্গে, তখন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এ দিন তাঁর টুইটে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে রীতিমতো যোগসাজশ না-থাকলে বিদেশে কী ভাবে গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে পারছেন হিরে ব্যবসায়ী মোদী আর শিল্পপতি বিজয় মাল্য?’’
একই ফ্রেমে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী। দাভোসে, এই সে দিন। ছবি সীতারাম ইয়েচুরির টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে
ব্যাঙ্কের কোনও একটি শাখা থেকে এত বড় প্রতারণার ঘটনা এ দেশে এর আগে ঘটেনি। শুধু পিএনবি-ই নয়, এর প্রভাব পড়তে পারে অন্যান্য আরও কয়েকটি ব্যাঙ্কের উপরেও।
আরও পড়ুন- হাড় ভেঙেছে যশোদার, খোঁজও নেননি মোদী
মুম্বইয়ের ওই পিএনবি শাখা বুধবার স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়েছে, তাদের শাখার বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল পরিমাণে টাকা বিদেশি ব্যাঙ্কের কিছু শাখায় লেনদেন হত। সে রকমই কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে বড়সড় অবৈধ লেনদেন হয়েছে। গতকাল ঘটনার কথা জানাজানি হতেই শেয়ার বাজারে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম অনেকটা নেমে যায়।
এ দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে পিএনবি দ্বিতীয় বৃহত্তম। তার আগে রয়েছে শুধুমাত্র এসবিআই (স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া)।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)-এর তরফে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।
তবে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, এই জালিয়াতি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই এবং ইডি। তবে, এর থেকে বেশি কিছু তাদের তরফে আর খোলসা করা হয়নি।
ওই টাকার পুরো বা আংশিক অংশ কি উদ্ধার হওয়ার আশা আছে?
পিএনবি এ ব্যাপারে কিছুই বলেনি।
ব্যাঙ্কিং সেক্টরের কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ অবশ্য টাকা উদ্ধারের ব্যাপারে কেউই নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারেননি।