নীরব মোদী। ফাইল চিত্র।
গত কাল দিনভর নীরব মোদীর বুটিক ও কারখানায় তল্লাশি চালিয়ে ইডি কর্তারা ঘোষণা করেছিলেন, ৫,১০০ কোটি টাকার হিরে, গয়না, দামি পাথর আটক করা হয়েছে। ভুল ভাঙল রাত পোহানোর আগেই। চোখ কচলে তাঁরা দেখলেন, হিরে-মুক্তোর গায়ের স্টিকারে যে দাম লিখে রেখেছেন নীরব, আসলে দাম তার অনেক কম!
বিদেশ থেকে গুজরাতের সুরাতের এসইজেড-এ বহুমূল্য হিরে-মুক্তো আনতেন নীরব। আমদানি শুল্ক ছাড়াই। কারণ, তিনি জানাতেন, এই হিরে-মুক্তো দিয়ে তৈরি গয়না রফতানি করবেন তিনি। বিদেশি মুদ্রা আসবে দেশের ভাঁড়ারে। কিন্তু বাস্তবে সেই হিরে-মুক্তো বা তার গয়না তিনি নগদে দেশের বাজারেই বেচে দিতেন। আর কম দামের হিরে-মুক্তো দিয়ে গয়না বানিয়ে তা রফতানি করতেন। কিন্তু হিসেব মেলানোর জন্য তাদের দাম অনেক বেশি বলে দেখাতেন।
আজ ইডি কর্তাদের একাংশ দাবি করেন, এ ভাবে নোট বাতিল পর্বে অনেকের টাকা যেমন বদলে দিয়েছেন নীরব, তেমনই ধুলো দিয়েছেন তাঁর ব্র্যান্ডের গয়নার ভক্তদের চোখেও। রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমদানি-রফতানিতে নীরব যে বেনিয়ম করছেন, ২০১৫ সালেই তা ধরা পড়েছিল। তাঁর সুরাতের কারখানায় হানা দিয়ে দেখা যায়, ১,১০০ কোটি টাকার হিরে থাকার থাকলেও, রয়েছে মাত্র ১০০ কোটি টাকার। তাঁকে ৩৭ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। নীরব সেই টাকা মিটিয়ে মামলা তুলে নিতে বলেন।’’
তার পরেও নীরব যে প্রতারণা বন্ধ করেননি, ইডি-কর্তারা তা টের পেয়েছেন। আজও ইডি ১১টি রাজ্যে ৩৫টি ঠিকানায় হানা দিয়ে ৫৪৯ কোটি টাকার হিরে, সোনা, গয়না আটক করেছেন। সব মিলিয়ে আটক জিনিসের দাম ৫,৬৪৯ কোটি টাকা। কিন্তু ইডি-কর্তারা মনে করাচ্ছেন, এটা ঘোষিত মূল্য। আসল দাম কত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।