Nirbhaya Case

নির্ভয়া: আবার দিন দিল কোর্ট, ফাঁসি ২০ মার্চ

আজ ফের ফাঁসির পরোয়ানা জারি করেছেন দায়রা আদালতের বিচারক রানা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০৩:৩৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

ছ’সপ্তাহে তিন বার পিছিয়ে দেওয়ার পরে ফের ২০ মার্চ নির্ভয়ার ধর্ষক-খুনিদের ফাঁসির দিন ধার্য করল দিল্লির পটিয়ালা হাউস কোর্ট। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা বৃহস্পতিবার মৃ্ত্যু পরোয়ানা জারি করে বলেন, ‘‘২০ মার্চ ভোর সাড়ে পাঁচটার সময়ে তিহাড় জেলে চার দণ্ডিতের ফাঁসি হবে।’’

Advertisement

২০১২-র ডিসেম্বরে দিল্লির এক চলন্ত বাসে ডাক্তারির ছাত্রী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করেছিল ছ’জন। কয়েক দিন পরে হাসপাতালে মারা যান তিনি। ছয অভিযুক্তই গ্রেফতার হয়। কিন্তু এক জন নাবালক থাকায় তিন বছর জুভেনাইল হোমে থাকার পরে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। আর এক অপরাধী রাম সিংহ জেলেই আত্মহত্যা করে। বাকি চার অপরাধী মুকেশ সিংহ (৩২), অক্ষয় সিংহ (৩১), বিনয় শর্মা (২৬) এবং পবন গুপ্তকে (২৫) মৃত্যুদণ্ড দেওযা হয় ন’মাসের মধ্যেই কিন্ত গত ছ’বছর ধরে নানা আইনি জটিলতায় সেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যায়নি। তিন বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেও ফাঁসি স্থগিত করে দেওয়া হয়।

এই চার জনের মধ্যে প্রথম তিন জনের সামনে আর কোনও আইনি পথ ছিল না। শুধু পবনের প্রাণভিক্ষার আর্জিতে রাষ্ট্রপতির প্রতিক্রিয়া জানানো বাকি ছিল। কাল রাষ্ট্রপতি সেই আর্জি খারিজ করে দেওয়ার পরে পটিয়ালা হাউস কোর্টে ফের মৃত্যু পরোয়ানা জারির আর্জি জানায় দিল্লি সরকার। সেই আবেদনে সায় দিয়ে আজ ফের ফাঁসির পরোয়ানা জারি করেছেন দায়রা আদালতের বিচারক রানা।

Advertisement

এত বছর ধরে বিচার চেয়ে আদালতে আদালতে ঘুরেছেন নির্ভয়ার বাবা-মা, বদ্রীনাথ ও আশাদেবী। আজকের রায় শুনে আশাদেবী বলেন, ‘‘যত দিন পর্যন্ত এই চার জন ফাঁসিকাঠে ঝুলছে, লড়াই চালিয়ে যাব। আশা রাখি, ২০ তারিখের ভোর আমাদের জীবনে নতুন ভোর নিয়ে আসবে।’’ আশাদেবী জানান, যদিও আইনে কোনও সুযোগ নেই, তবু দণ্ডিতদের ফাঁসি দেখতে পেলে তিনি খুশি হতেন।

এক বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি হওয়ার পরে তা খারিজ করতে দণ্ডিতদের সামনে দু’টি রাস্তা খোলা থাকে। প্রথমটি হল, উচ্চ আদালতে কিউরেটিভ পিটিশন দাখিল। সেই আর্জি মঞ্জুর না-হলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার পথও খোলা থাকে। রাষ্ট্রপতি যদি আর্জি খারিজ করে দেন, তার পরেও দণ্ডিতকে ফাঁসির আগে ১৪ দিন সময় দিতে হয়। আইনের এই পথ ধরেই ক্রমাগত ফাঁসির দিন পিছিয়ে দিচ্ছিলেন দণ্ডিতদের আইনজীবী এপি সিংহ।

আজকের রায় ঘোষণার পরেও এপি সিংহ দাবি করেন, তাঁর সামনে আরও পখথ খোলা রয়েছে। তিনি জানান, অক্ষয়ের হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ‘কমপ্লিট মার্সি প্লি’ বা ‘প্রাণভিক্ষার সম্পূর্ণ আবেদন’ পাঠিয়েছেন তিনি। আদালতের বাইরে এই আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এক বার তো রাষ্ট্রপতি অক্ষয়ের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিলেন। তা হলে আবার আর্জি কেন? আইনজীবী দাবি করেন, আগের আবেদনটি অসম্পূর্ণ চিল। তাতে সব তথ্য ছিল না। তাই ফের করে সব তথ্য দিয়ে নতুন করে আবেদন পাঠানো হয়েছে।

চার দণ্ডিতকে আলাদা আলাদা করে ফাঁসি দেওয়ার আর্জি জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। হাইকোর্ট সেই আর্জি খারিজ করে দেওয়ার পরে শীর্ষ আদালতে যায় কেন্দ্র। সেই আবেদনের শুনানি হবে ২৩ মার্চ। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই শুনানির সিদ্ধান্ত নীতিগত। তার আগে ২০ মার্চ নির্ভয়া মামলার অপরাধীদের ফাঁসি হচ্ছে কি না, তার উপরে এই শুনানি নির্ভর করবে না।

চার জনের সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য দিল্লি হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছিল একটি সংবাদমাধ্যম। আর্জি খারিজ করে বিচারপতি বলেন, ‘‘ওদের আর আশকারা দেবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন