Nirbhaya Rape Case

লড়াই চালিয়ে যাব: নির্ভয়ার মা

আমি দিল্লি সরকারকে প্রশ্ন করছি, কেন্দ্রীয় সরকারকেও প্রশ্ন করছি— তার মানে কি আমাদের মন রাখার জন্য ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল? সত্যিই কি কখনও ফাঁসি হবে না?’’

Advertisement

সীমন্তিনী গুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৪৭
Share:

আশা দেবী।

বিকেলে যখন টিভির পর্দায় তাঁকে দেখছিলাম, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। এত অপেক্ষার পরেও মেয়ে বিচার পেল না এখনও, সেই কথাই বলছেন বারবার। বেশ কিছু ক্ষণ পরে যখন তাঁকে ফোনে ধরা গেল, তখন ক্ষোভের জায়গা নিয়ে নিয়েছে ক্রোধ। ‘‘সুবহকে দস্ বাজে সে কোর্ট মে বৈঠি রহি। ইয়েহি অর্ডার সুনানি থি, তো ইতনি দের কিঁউ কর দি?’’ (এই রায়-ই যদি দেবে, তা হলে আমাদের সারা দিন আদালতে বসিয়ে রাখল কেন?)— রাগ আশাদেবীর কণ্ঠস্বরে।

Advertisement

২০১২-র ডিসেম্বরে দিল্লির এক চলন্ত বাসে গণধর্ষিতা ও নির্মম অত্যাচারের শিকার প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীটির মা আশাদেবী। দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে আশা করেছিলেন, অবশেষে বিচার মিলবে। কাল, ১ ফেব্রুয়ারি, ফাঁসি হবে ছয় অপরাধীর মধ্যে চার জনের। কিন্তু আজ বিকেলে দিল্লির দায়রা আদালত সেই মৃত্যু পরোয়ানার উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তার পরেই ভেঙে পড়েন আশাদেবী ও নির্ভয়ার বাবা বদ্রীনাথ সিংহ। শুক্রবার বিকেলে দিল্লি থেকে ফোনে আশাদেবী বললেন, ‘‘সাত বছর আগে আমার সন্তানের সঙ্গে ভয়ঙ্কর অপরাধ হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সরকার বা আদালত, কেউই তাকে ন্যায়বিচার দিয়ে উঠতে পারছে না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আদালতের ভিতরেই দণ্ডিতদের আইনজীবী এ পি সিংহ আমাদের চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ‘এ ফাঁসি কখনওই হবে না। অনন্তকালের জন্য ফাঁসি পিছিয়ে দেব!’ আপনিই বলুন, অপরাধীদের উকিল এ কথা বলার সাহস পান কোথা থেকে। আমি দিল্লি সরকারকে প্রশ্ন করছি, কেন্দ্রীয় সরকারকেও প্রশ্ন করছি— তার মানে কি আমাদের মন রাখার জন্য ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল? সত্যিই কি কখনও ফাঁসি হবে না?’’

এর আগেও এক বার ফাঁসির দিন ঘোষণা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে বার আদালত জানায়, ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটার বদলে চার দণ্ডিতের ফাঁসি হবে ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ছ’টায়। এ বার অনির্দিষ্ট কালের জন্য মৃত্যু পরোয়ানা পিছিয়ে গেল। কোনও দিনও ঘোষণা হল না। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নির্ভয়ার মা-র প্রশ্ন, ‘‘ইয়ে ক্যায়সে হো সকতা হ্যায় কে কোই তারিখ ভি হমে নহি মিলি (এ কী করে হতে পারে যে আমাদের কোনও তারিখও জানানো হল না)!’’

Advertisement

আজ বিকেলে আদালতের রায় ঘোষণার পরে আদালতের সামনে আশাদেবী বলেছিলেন, ‘‘আর পারছি না আমি। দোষীদের বাঁচাতে কেন এত চেষ্টা?’’ ফোনে অবশ্য অনেক বেশি প্রত্যয়ী শোনালো তাঁকে। বললেন, ‘‘আমি কিছুতেই হার মানব না। লড়াই চালিয়ে যাব। এই অপরাধীদের কখনওই ক্ষমা করা যাবে না। সরকারকে ফাঁসি দিতেই হবে। এই ফাঁসি না-হলে আমার মেয়ে তো কখনওই শান্তি পাবে না।’’ এ বার গলা ধরে এল নির্ভয়া-জননীর— ‘‘বার বার শুধু ওই চার জনের অধিকারের কথা বলা হচ্ছে। আমার মেয়ের কি বেঁচে থাকার কোনও অধিকার ছিল না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন