নিতিন ঠান্ডা, তবু রয়েই গেল যন্ত্রণা

তিন দিন ধরে এই কথাতেই মশগুল অমদাবাদ। যে রাজ্যে নরেন্দ্র মোদী এক ‘অতিকায়’ ব্যক্তিত্ব, তাঁর সেনাপতি অমিত শাহও প্রবল ক্ষমতাশালী— সেখানেই প্রথমে হোঁচট খেয়ে জিততে হল ভোটে।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৩
Share:

দিল্লিতে ‘তিন তালাক’, গুজরাতে ‘নি-তিন তালাক’।

Advertisement

তিন দিন ধরে এই কথাতেই মশগুল অমদাবাদ। যে রাজ্যে নরেন্দ্র মোদী এক ‘অতিকায়’ ব্যক্তিত্ব, তাঁর সেনাপতি অমিত শাহও প্রবল ক্ষমতাশালী— সেখানেই প্রথমে হোঁচট খেয়ে জিততে হল ভোটে। সরকার গড়ার পরে বিদ্রোহী হলেন উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেল। আর তাঁর দাবি মেনে অর্থ দফতর ফেরত দিয়ে শেষ পর্যন্ত ঝুঁকতে হল মোদী-শাহকেই।

মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী ঘোষণা করলেন, ‘‘সঙ্কট শেষ।’’ শাহরুখ খান-কাজলের ছবি ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’-র সংলাপের ধাঁচে বললেন, ‘‘বিজেপির মতো বড় পরিবারে এমন ছোটোখাটো ঘটনা হতেই পারে।’’

Advertisement

কিন্তু সত্যিই কি সঙ্কট মিটল?

আরও পড়ুন: সঙ্কট কাটল শাহের আশ্বাসে, দায়িত্ব নিলেন নিতিন পটেল

বিজেপির অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, ‘‘মোটেই না। বরং বাড়ল।’’ নেতারা বলছেন, মন্দের ভাল এটুকুই যে, গত কাল রাত থেকে আরএসএস ও বিজেপি নেতাদের ধারাবাহিক মধ্যস্থতায় নিতিন অবশেষে আজ দফতরের ভার নিলেন। তাঁকে রাজি করাতে খোদ অমিত শাহকে ফোন করে আশ্বাস দিতে হল, অর্থ দফতর ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সর্বভারতীয় সভাপতির ফোন না আসা পর্যন্ত নিতিন যে ভাবে অনড় থেকে বিদ্রোহকে প্রকাশ্যে এনে ফেললেন, নিজের সমর্থকদের খেপিয়ে তুললেন, সেটি সরাসরি দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ। খোদ মোদী-শাহের গড়ে। যা এত দিন কেউ ভাবতেই পারত না।

ঘরোয়া মহলে বিজেপির এক নেতা বললেন, ‘‘এটা ভাবার কোনও কারণ নেই যে, আপাতত অমিত শাহ তাঁকে অর্থ দফতর ফিরিয়ে দিলেন বলে ভবিষ্যতে তিনি পার পেয়ে যাবেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী রূপাণী আদপে অমিতেরই ঘনিষ্ঠ। পটেল সম্প্রদায়ের আনন্দীবেন পটেলকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে রূপাণীকে গদিতে বসানোর কারিগর বিজেপি সভাপতিই। নিতিনও পাতিদার। কিন্তু উপমুখ্যমন্ত্রী করার বদলে বড় মন্ত্রক কেড়ে নেওয়া হলে তিনি যে এ ভাবে ফোঁস করতে পারেন, তা আগে কোনও ভাবেই আঁচ করতে পারেনি বিজেপি। এই সুযোগে কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং হার্দিক পটেল বুঝিয়ে দিলেন, গুজরাতে বিজেপি সরকার আসলে নড়বড়ে। দশ বিধায়ক বেরিয়ে এলেই গদি উল্টোবে।

এরই মধ্যে রূপাণীর জন্য আরও দুঃসংবাদ এনেছেন কিছু জ্যোতিষী। তাঁদের ভবিষ্যৎবাণী— রূপাণী সরকার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবে না। পাশাপাশি আর এক যন্ত্রণা শুরু হয়েছে মোদী-শাহের। নিতিন বলেছিলেন, মন্ত্রক নয়, সম্মান জরুরি। সেই সুর ধরে এ বারে সরব হয়েছে রাজ্যের কোলি সম্প্রদায়। তাদের হুমকি, কোলি সম্প্রদায় সব থেকে বেশি বিধায়ক দিয়েছে বিজেপিকে, কিন্তু মন্ত্রী মাত্র এক জন। আরও মন্ত্রী বাড়াতে হবে। নিতিনের সমর্থকদের বন্‌ধ-আন্দোলন সামাল দিয়ে এ বার কোলিদের সামাল দিতে নামতে হয়েছে রূপাণীকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement