নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র।
টানাপড়েন চলছিল ভিতরে-ভিতরে। বিজেপি এবং জেডিইউয়ের মধ্যে দূরত্ব সামনে চলে আসে পটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে। আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপির দুর্গে জেডিইউয়ের ছাত্র সংগঠন সভাপতি পদ জিতে নেওয়ায় কার্যত ঘি পড়ে আগুনে। স্পষ্ট হয়ে যায়, লোকসভা ভোটে একসঙ্গে লড়ার কথা থাকলেও এবং বিহারে মিলিজুলি সরকার চালালেও বিজেপি এবং জেডিইউয়ের মধ্যে ঠিকঠাক চলছে না সব কিছু। লোকসভা ভোটের মুখে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রকাশ্য তরজা। রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা প্রমোদ কুমার তীব্র ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে আক্রমণ করছেন। আর জেডিইউ নেতাদের পাল্টা পরামর্শ, মন্ত্রী থেকে বেচাল মন্তব্য! সামলে চলুক বিজেপি।
কথা হয়ে রয়েছে, বিহারে সমসংখ্যক আসনে লড়বে দুই দল। কিন্তু এখনও কিছু ঘোষণা করা হয়নি এ ব্যাপারে। এর মধ্যে জেডিইউ সহসভাপতি বিকল্প জোটের খোঁজে জন অধিকার পার্টির নেতা পাপ্পু যাদব এবং নিষাদ সম্প্রদায়ের নেতা মুকেশ সাহনীর সঙ্গে কথা বলছেন বলে খবর। যাতে ভুরু কুঁচকেছে বিজেপির।
বিজেপি-জেডিইউ জোট প্রসঙ্গে পর্যটনমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা প্রমোদ কুমার গত কাল জহানাবাদে প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘‘আমরা নীতীশ কুমারকে ডাকতে যাইনি। তিনি নিজে থেকে আমাদের কাছে এসেছেন।’’ নীতীশকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিজেপিকে যাঁরা জুমলা পার্টি বলতেন, তাঁরাই আজ আমাদের সঙ্গে। কাউকে আমরা নিমন্ত্রণ করিনি।’’ লালুপ্রসাদ ও তাঁর দলকে উপেক্ষার ভঙ্গিতে প্রমোদ বলেন, ‘‘লালু আজ কোথায়?’’ নীতীশকে আক্রমণের জবাবে মুখ খোলেন জেডিইউয়ের বিধান পরিষদ সদস্য দিলীপ চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘প্রমোদ কুমার ভুলে যাচ্ছেন, এখনও তিনি নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভার সদস্য। আমরা এ সব বরদাস্ত করব না।’’
নীতীশ আবার তলে-তলে বিজেপি-বিরোধী শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও খবর রয়েছে। প্রশান্ত কিশোর গত ২৬ নভেম্বর আরজেডি থেকে বহিষ্কৃত মাধেপুরার সাংসদ পাপ্পু যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেন। একই ভাবে নিষাদ সম্প্রদায়ের নেতা মুকেশ সাহনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন প্রশান্ত। দুই ক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও এ নিয়ে পাপ্পু, মুকেশ বা প্রশান্ত— মুখ খুলছেন না কেউই। আর এতেই চটেছেন বিজেপি নেতারা। পটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক্ষত’ শুকোনোর আগেই দু’দলের লড়াইয়ে রাজ্যে জল্পনা বেড়েছে, নীতীশ কি ফের শিবির বদল বা নতুন কোনও ছক কষছেন প্রশান্তকে ঘুঁটি করে!