কলকাতা বন্দর রাখার কোনও প্রয়োজনই নেই বলেই মনে করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। পাশাপাশি, আজও ফরাক্কা ব্যারেজের উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা ভেঙে ফেলার দাবি জানিয়েছেন নীতীশ। আজ পটনায় ‘অবিরল গঙ্গা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নীতীশ তাঁর মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা বন্দর বর্তমানে অর্থহীন। বিশ্বের কোথাও এখনও নদী বন্দর আছে বলে মনে হয় না।’’ পাশাপাশি, বিহারের উপর দিয়ে যাওয়া হলদিয়া-ইলাহাবাদ এক নম্বর জাতীয় জলপথের বিষয়েও তাঁর সরকার প্রয়োজনীয় অনুমতি দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন নীতীশ।
এ দিন গঙ্গা নিয়ে বক্তব্য রাখার সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেন নীতীশ। তিনি বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে বারাণসীতে গিয়েছিলাম। সেখানে কয়েক জন আমাকে বললেন, গঙ্গা মা এখন তাঁর ছেলেকে খুঁজছেন।’’ এরপর নিজের সঙ্গে গঙ্গার দীর্ঘদিনের সম্পর্কের উল্লেখ করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার জন্ম, বাড়ি, স্কুল, কলেজের গোটা সময়টাই গঙ্গার তীরে কেটেছে। ছোটবেলার গঙ্গা আজ আর নেই। সে কারণেই আমার এই লড়াই।’’
বিহারে বন্যার জন্য ফরাক্কা বাঁধকেই দায়ী করে আসছেন নীতীশ কুমার। তাঁর দাবির প্রেক্ষিতে তদন্তকারী দলও পাঠায় কেন্দ্র। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় জল কমিশনের ২০১৬ সালের রিপোর্ট সামনে এসেছে। তাতে অবশ্য নীতীশের দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফরাক্কা বাঁধের উপরাংশে ৪২ কিলোমিটার পর্যন্ত তার প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরের ভাগলপুর বা ৪০০ কিলোমিটার দূরের পটনায় বন্যার সঙ্গে ফরাক্কা বাঁধের সম্পর্ক নেই। বিহারে বন্যার জন্য সেখানকার গঙ্গা তীরের অবৈধ নির্মাণ এবং ‘কলা’-র জমিকেই দায়ী করা হয়েছে। গঙ্গার পাশে থাকা কলার খেত থেকে ফসল তোলার পরে কলা গাছগুলি নদীতে ফেলে দেওয়ায় তা পচে-জমেই জলপথ বন্ধ করছে বলেও দাবি কমিশনের।