Nitish Kumar

Nitish Kumar: বেসুরো নীতীশ, বিজেপি বিরোধে দ্বৈত অস্ত্রে শান

রাজ্যসভার টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন কৌশল নিয়েছেন নীতীশ। সংসদের উচ্চকক্ষের জন্য কাকে  মনোনয়ন দেওয়া হবে, তা দলের উপরেই ছাড়তে চান নীতীশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২২ ০৭:১১
Share:

ফাইল চিত্র।

বিহার বিধানসভার নির্বাচনের পর থেকেই নানা বিষয়ে শাসক জোটের দুই শরিক নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবং বিজেপির মধ্যে মতানৈক্য সামনে এসেছে। সেই দড়ি টানাটানির জেরে এ বার আরও আগ্রাসী ভূমিকা নিতে চলেছেন নীতীশ। এক দিকে শীঘ্রই জাতশুমারির কাজ শুরুর ইঙ্গিত, অন্য দিকে রাজ্যসভার সদস্য এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামচন্দ্র প্রসাদ সিংহকে ফের সংসদের উচ্চকক্ষে টিকিট না-ও দিতে পারেন নীতীশ। তাঁর এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রামচন্দ্রের বিজেপি ঘনিষ্ঠতাই এক সময়ে তাঁর শক্তি বলে বিবেচিত হত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই নৈকট্যেরই মূল্য চোকাতে হতে পারে রাজ্যসভার এই নেতাকে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকেও সরে যেতে হবে তাঁকে।

Advertisement

রাজ্যসভার টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে এ বারে অন্য কৌশল নিয়েছেন নীতীশ। সংসদের উচ্চকক্ষের জন্য কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তা দলের উপরেই ছাড়তে চান নীতীশ। রাজনৈতিক মহলের মতে, এর ফলে সরাসরি অপ্রিয় সিদ্ধান্ত এড়াতে পারবেন তিনি। দলীয় সিদ্ধান্তের ‘অজুহাতে’ বিষয়টি কার্যকর করা সম্ভব হবে। তার পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজ্যসভার প্রার্থী ঘোষণা করবেন জেডিইউ প্রধান।

বিগত কিছু দিন ধরেই বেসুরো নীতীশ। শুধু আরজেডি-সখ্য নয়, জাতশুমারি নিয়ে নীতীশের অবস্থানও বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। আজ নীতীশ ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁর সরকার শীঘ্রই বিহারে জাতশুমারির কাজ শুরু করবে। নীতীশের কথায়, ‘‘জাতশুমারির ক্ষেত্রে সকলের মতামত নেওয়ার জন্য সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। বাকিদের সম্মতি পেলেই ২৭ তারিখ সেই বৈঠক হতে পারে। সেখানে যে সিদ্ধান্ত হবে তা প্রস্তাব আকারে রাজ্য মন্ত্রিসভায় তোলা হবে। এবং কাজ শুরু হবে।’’

Advertisement

সম্প্রতি লালুপ্রসাদের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশির ঘটনাতেও আশ্চর্য রকম নির্লিপ্ত ছিলেন তিনি। সিবিআই তল্লাশি নিয়ে প্রশ্নের মুখে নীতীশের মন্তব্য, ‘‘আমরা এর কিছুই জানি না। যারা তল্লাশি করেছে, তারাই বলতে পারবে।’’ সেই মন্তব্য জল্পনার আগুনে আরও ঘি ঢেলেছে। কিছু দিন আগে লালু তনয় তেজস্বী যাদবের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ইফতারে যোগ দিয়েছিলেন। তার পরে জাতিগণনা নিয়ে তেজস্বীর সঙ্গে নীতীশের আলোচনাও এনডিএ জোটের বড় শরিক বিজেপির উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে নীতীশের এক সময়ের ডেপুটি (উপমুখ্যমন্ত্রী) সুশীল মোদী আরজেডি-কে নিশানা করার পাশাপাশি নিয়মিত নীতীশের দলের লালন সিংহ, শিবানন্দ তিওয়ারির প্রশংসা করছেন। এই কৌশলে জেডিইউয়ে নেতৃত্বের প্রশ্নে নীতীশের উপরে চাপ বাড়াচ্ছেন সুশীল।

তবে এক সাক্ষাৎকারে অবশ্য নীতীশের সঙ্গে আরজেডি ঘনিষ্ঠতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন সুশীল। তাঁর কথায়, ‘‘কেন নীতীশ আরজেডি-র সঙ্গে যাবে? ওর গোটা রাজনীতি জুড়েই রয়েছে লালুর বিরোধিতা।... নীতীশ এক বার হয়তো আরজেডি-র হাত ধরেছে, কিন্তু ফের একই ভুল করবে না নীতীশ।’’

একান্তে কয়েক জন বিজেপি নেতাও জানিয়েছেন, লালুর বাড়ি সিবিআই তল্লাশি নীতীশকেও আরজেডি সখ্য সম্পর্কে সাবধান করা।

প্রসঙ্গত বিধানসভায় কম সদস্য নিয়েও নীতীশ মুখ্যমন্ত্রীর তখ্‌তে বসলেও তাঁর দলের অবস্থা কার্যত দুয়োরানির মতোই। নানা বিষয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে চাপান-উতোরও সামনে এসেছে। তার জেরেই তিতিবিরক্ত নীতীশ কিছু দিন আগে প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক করেন বলে জল্পনা তৈরি হয়। এমনটাও শোনা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে রাষ্ট্রপতি হতে আগ্রহী নীতীশ। যদিও বিষয়টি সহজ হবে না মালুম করেই কার্যত পিছিয়ে আসেন নীতীশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন