নীতীশের শপথে আজ পটনায় বিরোধী সম্মেলন

নীতীশ কুমারের শপথগ্রহণকে কেন্দ্র করে কাল পটনায় বিজেপি-বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতাদের কার্যত একটি ‘সম্মেলন’ হতে চলেছে। সাবেক জনতা পরিবারের সদস্যরা তো থাকছেনই। থাকবেন কংগ্রেসের প্রতিনিধিরাও। এবং থাকছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপাতত ঘোষিত অনুষ্ঠান একটাই, শপথগ্রহণ। কিন্তু জেডিইউ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশাপাশি শীর্ষ নেতাদের একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকও হবে। সেখানেই আলোচনা হবে বিজেপিকে প্রতিরোধের রণকৌশল।

Advertisement

স্বপন সরকার

পটনা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০২
Share:

নীতীশ কুমারের শপথগ্রহণকে কেন্দ্র করে কাল পটনায় বিজেপি-বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতাদের কার্যত একটি ‘সম্মেলন’ হতে চলেছে। সাবেক জনতা পরিবারের সদস্যরা তো থাকছেনই। থাকবেন কংগ্রেসের প্রতিনিধিরাও। এবং থাকছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আপাতত ঘোষিত অনুষ্ঠান একটাই, শপথগ্রহণ। কিন্তু জেডিইউ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশাপাশি শীর্ষ নেতাদের একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকও হবে। সেখানেই আলোচনা হবে বিজেপিকে প্রতিরোধের রণকৌশল। উপস্থিত থাকবেন মুলায়ম সিংহ যাদব, তাঁর পুত্র তথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া, হরিয়ানার জাঠ নেতা ওমপ্রকাশ চৌটালার পুত্র অভয় সিংহ। কংগ্রেসের তরফে উপস্থিত থাকবেন বিহারের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক সি পি জোশী। নীতীশ আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকেও। আর বর্তমানে নীতীশ কুমারের অন্যতম ‘মেন্টর’ লালুপ্রসাদ তো থাকছেনই। জেডিইউ নেতারা বলছেন, “আমরা মায়াবতীকেও পাশে পেতে চাই।”

গত কয়েক মাসে সাবেক জনতা পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে একাধিক বার মিলিত হয়েছেন। বিজেপি, বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদীর বিজয় রথকে রুখতে দীর্ঘ আলোচনাও করেছেন। সেখানেই ঠিক হয়েছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সাবেক জনতা দল থেকে ভেঙে বেরিয়ে আসা বিভিন্ন দল—লালুর আরজেডি, মুলায়মের সমাজবাদী পার্টি, দেবগৌড়ার কর্নাটকি জনতা দল, নীতীশ-শরদের জেডিইউ, চৌটালার হরিয়ানা-ভিত্তিক জনতা দল প্রভৃতিকে মিলিয়ে-মিশিয়ে ফের একক একটি জনতা দলের রূপ দেওয়া হবে। সেই সিদ্ধান্তের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে জনতা পরিবারের সদস্যরা এক মঞ্চে হাজির হচ্ছেন নীতীশের শপথকে সামনে রেখে।

Advertisement

তবে নীতীশ জানেন, শুধু একক জনতা দলের পক্ষে বিজেপিকে রোখা সম্ভব নয়। দরকার এক বৃহত্তর মঞ্চের। এক বৃহত্তর জোটের। উল্লেখ্য, এমন বিরোধী ‘কনক্লেভ’-এর সাক্ষী ছিলেন কলকাতার মানুষ। বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহকে সামনে রেখে কলকাতায় হয়েছিল প্রথম বিরোধী কনক্লেভ। তবে সে বার ছিল কংগ্রেস-বিরোধিতা। সেখানে সামিল ছিল আজকের বিজেপি-ও। কলকাতার মঞ্চে হাতে হাত ধরে জোটবদ্ধ হয়েছিলেন জ্যোতি বসু, অটলবিহারী বাজপেয়ী, বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ, চন্দ্রশেখর, দেবীলাল, রামকৃষ্ণ হেগড়ে, ফারুক আবদুল্লা—তৎকালীন ভারতীয় রাজনীতির কে নয়? আর এ বারের লক্ষ্য বিজেপি।

তবে ভিন্ন পরিস্থিতিতে নীতীশ অবশ্য এখনও বামেদের পাশে পাওয়ার কোনও চেষ্টা করেননি।

গত কাল রাত থেকে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে একের পর এক যোগাযোগ করেছেন দেশের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে। ভবিষ্যতের জোটের কথা মাথায় রেখে আগামী কাল নীতীশের সঙ্গে জোট-মন্ত্রিসভাই শপথ নিতে চলেছে বলে জেডিইউ সূত্রে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। নীতীশ স্বয়ং তাঁর মন্ত্রিসভায় শরিকদের জায়গা দিতে আগ্রহী। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে দিল্লির মসনদে বিজেপি-বিরোধী জোটের স্বপ্ন বোনা শুরু হচ্ছে রাত পোহালেই, পটনার গঙ্গাতীরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন