Suicide

২৭ মাস বেতনহীন, অসমে আত্মঘাতী বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার

এক সহকর্মী জানান, দিন কয়েক আগে শেষ বিমার সঞ্চয়ও ভেঙে ফেলে আক্ষেপ করেছিলেন, আর কোনও সঞ্চয় থাকল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ১৩:৩৬
Share:

বিশ্বজিৎ মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।

রবিবার থেকে কলকাতায় থাকা স্ত্রী এবং দিল্লি ও কেরলে পাঠরত দুই মেয়ের ফোন ধরছিলেন না। শনিবার থেকে যাচ্ছিলেন না অফিসেও। শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর ফোন পেয়ে গত কাল বিকেলে সহকর্মীরা অসমের নগাঁওয়ের হিন্দুস্তান পেপার কর্পোরেশনের (এইচপিসি) টাউনশিপের অফিসার আবাস থেকে ইউটিলিটি অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজার বিশ্বজিৎ মজুমদারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করলেন।

Advertisement

গত ২৬-২৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না এইচপিসির নগাঁও ও কাছাড় কলের কর্মীরা। এই নিয়ে নগাঁওয়ে তিন জন আত্মঘাতী হলেন। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৩১ জনের। কাছাড় ও নগাঁওয়ের কারখানা মিলিয়ে আত্মহত্যা, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৫৫ হল।

পৈত্রিক বাড়ি কালনায় হলেও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বজিৎবাবু সপরিবারে কলকাতার বেলগাছিয়ায় থাকতেন। স্ত্রী শিক্ষিকা। যমজ মেয়ে। এক কন্যা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃতত্বে এমফিল ও অন্য জন কেরলে জিনতত্ত্বে গবেষণা করছেন। আগে কাছাড়ের পাঁচগ্রাম কাগজ কলে নিযুক্ত বিশ্বজিৎবাবু ২০১১ থেকে নগাঁওয়ের জাগি রোড কারখানায় যোগ দেন। অফিসার আবাসে একাই থাকতেন। ভাল গাইয়ে বিশ্বজিৎবাবু সহকর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলেন। মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় কার্পণ্য রাখতে চাননি তিনি। কিন্তু ২০১৭ সালের মার্চ থেকে কারখানা ও বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে সঞ্চয় ভেঙে চলতে হচ্ছিল তাঁকে। তবু তীব্র অর্থসঙ্কটের আঁচ পরিবারে পড়তে দেননি।

Advertisement

আরও পড়ুন: ২০৫ কিমি বেগে গোপালপুর-চাঁদবালির উপর শুক্রবার আছড়ে পড়তে পারে ফণী​

আরও পড়ুন: ‘মোদী এক জনকে নিলে লক্ষ নেতা তৈরি করব’, হুঙ্কার মমতার​

এক সহকর্মী জানান, দিন কয়েক আগে শেষ বিমার সঞ্চয়ও ভেঙে ফেলে আক্ষেপ করেছিলেন, আর কোনও সঞ্চয় থাকল না। পুলিশের সন্দেহ, সেই হতাশা থেকেই চরম সিদ্ধান্ত নেন ৫৫ বছরের বিশ্বজিৎবাবু। স্ত্রী মণিদীপা মজুমদার, শ্যালক ভাস্কর মৈত্র ও মেয়েরা খবর পেয়ে আজ সকালে মরিগাঁওয়ের হাসপাতালে আসেন। গুয়াহাটিতেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। নগাঁও পেপার মিল ইউনিয়নের নেতা হেমন্ত কাকতি জানান, গত বছর রাধিকা মজুমদার ও প্রভা ডেকা নামে দুই কর্মী আত্মহত্যা করেছেন। তিন হাজার কর্মীর অনেকেই ঋণের দায়ে জর্জরিত। পরিবার অর্ধাহারে আছে। অসুস্থ হলেও চিকিৎসা-বিমার টাকা মিলছে না। সব সঞ্চয় শেষ। ছেলেমেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার পথে। ২০১৫ থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড জমা পড়েনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement