শৌচালয় নেই, শ্বশুরবাড়ি ছাড়লেন নববধূ

শৌচাগার না থাকায় শ্বশুরবাড়ি ছাড়লেন নব-বিবাহিতা বধূ। বার বার শৌচাগারের দাবি জানিয়েও কাজ না হওয়ায় স্বামীকে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সালিশিতে ‘ডিভোর্স’ও দিয়ে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

দিবাকর রায়

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৬ ১৮:৩৪
Share:

কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছতা ও পানীয় জল মিশনের বিজ্ঞাপনে অভিনেত্রী বিদ্যা বালন। সরকারি সচেতনতা থাকলেও বাস্তব চিত্র এখনও অন্য কথা বলে। ছবি: ইউটিউব সৌজন্যে।

শৌচাগার না থাকায় শ্বশুরবাড়ি ছাড়লেন নব-বিবাহিতা বধূ। বার বার শৌচাগারের দাবি জানিয়েও কাজ না হওয়ায় স্বামীকে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সালিশিতে ‘ডিভোর্স’ও দিয়ে দিয়েছেন তিনি। বিহারের বাগহা জেলার দিয়ারা-চর এলাকার খোতহবা গ্রামের বধূ, অর্চনা গৌতমের এই সিদ্ধান্তে হইচই পড়ে গিয়েছে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছতা ও পানীয় জল মিশনের বিজ্ঞাপনে অভিনেত্রী বিদ্যা বালনের কথায় উঠে এসেছিল এমনই এক মহিলা, প্রিয়াঙ্কা ভারতীর কথা। প্রিয়াঙ্কার জেদেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন শৌচাগার করতে বাধ্য হন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য তা হয়নি। টানা ৪৫ দিন ধরে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে লড়াই করেও সফল হননি অর্চনা। তাই বাধ্য হয়েই বাপের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন তিনি। পরে, গত কালই গ্রামের সালিশি সভায় এসে স্বামীকে ‘ডিভোর্স’ দেওয়ার কথাও জানিয়ে গিয়েছেন।

বিহারে আগামী চার বছরে ৭ লক্ষ ৫২ হাজার ৮৬৩টি শৌচাগার তৈরির লক্ষ্য স্থির করেছে নীতীশ সরকার। গোটা প্রকল্প রূপায়ণে মোট ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দও ধরা হয়েছে। কেন্দ্র শৌচাগার পিছু ৪ হাজার এবং রাজ্য সরকার ৮ হাজার টাকা দেবে বলে জানিয়েছেন নগরোন্নয়ন সচিব চৈতন্যপ্রসাদ। উল্লেখ্য, নীতীশের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলির অন্যতম ছিল এই বাড়িতে বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণ। নির্বাচনে জেতার পরে নীতীশ কুমারের ‘সাত নিশ্চয়’-এরও অন্যতম বিষয় শৌচাগার। প্রশান্ত কিশোরকে মাথায় রেখে বিহার বিকাশ মিশন সেই লক্ষ্যপূরণেই তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তার কাজ এখনও শুরু করে উঠতে পারেনি সরকার। রাজ্যে বর্তমানে ৩৫ হাজার ১৫৫টি শৌচাগার তৈরির কাজ চলছে। চলতি আর্থিক বছরে ৩ লক্ষ শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু করা হবে বলেও রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।

Advertisement

অর্চনা গৌতম অবশ্য এ সব পরিসংখ্যানের খবর রাখেন না। বিহার লাগোয়া পূর্ব উত্তরপ্রদেশের মংশা-ছাপর গ্রামে বাপের বাড়ি তাঁর। তাঁদের গ্রামে বাড়ি বাড়ি শৌচাগার রয়েছে। বাড়িতে পানীয় জলের জন্য নলকূপও রয়েছে। গত ২০ মে বাবলু কুমারের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। সে সময়ে কথা ছিল বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করবেন বাবলু। দিনের পর দিন খোলা মাঠে যেতে নিজের আপত্তির কথা জানাতে ভুলতেন না অর্চনা। এ ছাড়া, বাড়িতে পানীয় জলের কল বসানোরও দাবি ছিল তাঁর। বিয়ের পর তাঁর কথায় শ্বশুরবাড়ির কেউই পাত্তা দেননি। সালিশি সভায় নিজের সেই ভুলের কথা স্বীকারও করেছেন বাবলু। আরও কিছু দিন সময় দিলে সরকারি সাহায্যে শৌচাগার তৈরি করবেন বলে জানিয়েছিলেন বাবলু। তাতে কাজ হয়নি। অর্চনার বাপের বাড়িও তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement