ভ্রূণহত্যা? তিনমাসে একটিও কন্যাসন্তান জন্ম নেয়নি উত্তরকাশীর ১৩২ গ্রামে

কন্যাভ্রূণ হত্যার প্রবণতা ব্যাপক আকার ধারণ করাতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী কল্পনা ঠাকুর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ১৭:৩৫
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

একটা গোটা গ্রামে। তাতে মেয়ে নেই একটিও। ২০০৩ সালে এই পটভূমিতেই ‘মাত্রুভূমি: আ নেশন উইদাউট উইমেন’ ছবির গল্প বুনেছিলেন পরিচালক মণীশ ঝা। তাঁর সেই ছবির গল্পই এ বার বাস্তব হয়ে ধরা দিল উত্তরাখণ্ডে। সেখানকার উত্তরকাশী জেলার ১৩২টি গ্রামে গত তিন মাসে একটিও কন্যাসন্তান জন্ম নেয়নি।

Advertisement

কোন গ্রামে কত শিশু জন্ম নিল, তাতে নারী-পুরুষ ব্যবধান কতটা কমল, তার হিসাব থাকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। তাদের সেই রিপোর্ট থেকেই সম্প্রতি এমন তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, গত তিনমাসে উত্তরকাশীর ১৩২টি গ্রামে ২১৬ শিশু জন্ম নিয়েছে। যার মধ্যে, ডুন্ডা ব্লকের ২৭টি গ্রামে ৫১টি, ভাতওয়ারির ২৭টি গ্রামে ৪৯টি, নওগামের ২৮টি গ্রামে ৪৭টি, মোরির ২০টি গ্রামে ২৯টি, চিনিয়ালিসৌড়ের ১৬টি গ্রামে ২৩টি এবং পুরোলা ব্লকের ১৪টি গ্রামে ১৭টি শিশুর জন্ম হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে একটিও শিশুকন্যা নেই।

বিষয়টি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে উত্তরকাশী জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক আশিস চৌহান বলেন, ‘‘যে জায়গাগুলিতে একটিও কন্যাসন্তান জন্ম নেয়নি, বা কন্যাসন্তান জন্মের সংখ্যা এক অঙ্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ, ওই জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কী কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল, তা খতিয়ে দেখছি আমরা।’’ ইতিমধ্যেই অ্যাক্রেডিটেড সোশ্যাল হেল্থ অ্যাক্টিভিস্ট (আশা)-এর সঙ্গে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠক হয়েছে, তাঁদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রথম ধাপ সফল, চালু ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন, পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছে গেল চন্দ্রযান-২​

তবে কন্যাভ্রূণ হত্যার প্রবণতা ব্যাপক আকার ধারণ করাতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী কল্পনা ঠাকুর। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘ওই গ্রামগুলিতে গত তিনমাসে একটিও শিশুকন্যা জন্মায়নি। এটা কখনওই কাকতালীয় ঘটনা হতে পারে না। বরং কন্যাভ্রূণ হত্যা যে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে, এটা তারই ইঙ্গিত। সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপই করছে না।’’

আরও পড়ুন: এ বার কর্নাটকে নাটকে নয়া মোড়, আজ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আস্থাভোট, জানালেন অধ্যক্ষ

কল্পনা ঠাকুর ছাড়াও, এই ঘটনায় হতবাক বিশিষ্ট মহলও। গত কয়েক বছরে কন্যাসন্তানের শিক্ষা ও সুরক্ষার জন্য একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’-এর মতো প্রকল্পের প্রচারে খরচ করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা। কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষের কাছে আদৌ বার্তা পৌঁছেছে কি? কন্যাভ্রূণ হত্যা রুখতে কড়া ব্যবস্থা নিতে পেরেছে কি সরকার? উঠে আসছে এমন প্রশ্নও।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন