পাহারা: সামনেই সীমান্তের কাঁটাতার। বাঙ্কারে বিএসএফ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
চোপড়া ব্লকের ফতেপুর এখন সুড়ঙ্গ গ্রাম!
ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরেও মোবাইলে ছবি, ভিডিও থেকে এলাকার যুবকদের ফেসবুক স্ক্রিনে ভাসছে শুধুই সুড়ঙ্গ। অনেকে ইউটিউবে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সিনেমার সঙ্গেও তা মিলিয়ে দেখছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে রামগঞ্জ, কামারগছ, ফতেপুর, বড়গছ বা লক্ষ্মীপুরের মতো পাশাপাশি গ্রামগুলিতে একই আলোচনা। সকলের মুখে একটাই কথা, ‘‘কী সুড়ঙ্গ খুঁড়িসে রে, পুরা এপার ওপার বাংলাদেশ।’’
৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে রামগঞ্জ বাজার, ক্যানেল হয়ে ১২ কিলোমিটার দূরে ফতেপুর ও লক্ষ্মীপুর। ছোট ছোট চা বাগান, পুকুর, পাট খেত, ধান, আনাজের খেতে ভরা এলাকাটি চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে। ১০ কিলোমিটারের মতো সীমান্তও রয়েছে। এলাকার চা দোকান, মুদির দোকান থেকে ভুটভুটি বা অটো স্ট্যান্ড, জটলা সর্বত্র। কামারগছের আসরাফুল হক বা ডাঙাপাড়ার কৃষ্ণ বর্মন জানান, গ্রামের নামটা দেশের অনেকেই জেনে গেল। সমিতির তৃণমূলের সহকারী সভাধিপতি জাকির আবেদিন বলেন, ‘‘সুড়ঙ্গ গ্রাম নামই হলে গেল!’’
কিন্তু এ সবের মধ্যে ভাল কিছু দেখছেন না লক্ষ্মীপুর চা বাগানের মুন্সি আলি হোসেন। গত সোমবার সুড়ঙ্গ উদ্ধারের পরেই আলিকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল বিএসএফ। তাঁকে দেখলেই ঘিরে ধরে গাছতলায় বসে যাচ্ছে আড্ডা। আলি জানান, বিএসএফ এলাকায় কাউকে ঘেঁষতেই দিচ্ছে না। তাতেই সারদিনের কাজকর্ম পণ্ড হতে বসেছে। কী ভাবে? বলেন, ‘‘কত আর সুড়ঙ্গের গল্প শোনাব!’’ তার পর বিড়বিড় করে বলেন, ‘‘এখন লোকে আনন্দ পাচ্ছে। আমার তো ভয় হচ্ছে। কী যে আসত এপারে!’’
স্থানীয় তৃণমূল যুব সভাপতি আমিন হোসেনও চা বাগান বা পাট খেতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন। নেতা হওয়ায় মাঝেমধ্যে ক্যাম্পের জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলে আসছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সুড়ঙ্গটা আমাদের এলাকাকে জনপ্রিয় করে দিল। মোবাইলে সুড়ঙ্গের ছবি না থাকলে দর কমে যাচ্ছে।’’
বড়গছের ছোট চা বাগানের মালিক তন্ময় বললেন, ‘‘এ তো পুরো বজরঙ্গি ভাইজানের গল্পের মতো!’’