ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার বেগে ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ল তিতলি

ভারী বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কায় ওড়িশার প্রতিটি জেলায় সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। মুখ্য সচিব এ পি পাধি জানিয়েছেন, দুর্যোগে এক জনেরও যাতে প্রাণহানি না হয়, তার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভুবনেশ্বর শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩৯
Share:

ভারী বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কায় ওড়িশার প্রতিটি জেলায় সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।

শক্তি বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার মধ্যে ওড়িশা ও অন্ধ্রের উপকূলে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় তিতলির। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপরে ঘোরাফেরা করা গভীর নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। তড়িঘড়ি জরুরি বৈঠকে বসেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। গঞ্জাম, পুরী, খুরদা, কেন্দ্রাপড়া ও জগৎসিংহপুর থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আজ ও কাল বন্ধ থাকবে গজপতি, গঞ্জাম, পুরী ও জগৎসিংহপুরের স্কুল-কলেজ।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওড়িশার গোপালপুরে আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০২ কিলোমিটার। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামে এই গতিবেগ ছিল ১৪০- ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, ওড়িশার গোপালপুর এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তনমে ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ার কথা তিতলি-র। দফতরের কর্তা এইচ আর বিশ্বাসের কথায়, ‘‘আগামী ১৮ ঘণ্টায় আরও শক্তি বাড়াবে ওই ঘূর্ণিঝড়। কাল ভোরে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে সরে গোপালপুর ও কলিঙ্গপত্তনমের উপর দিয়ে ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ পেরোবে। এর পরে ফের একই জায়গায় ঘুরে এসে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের দিকে সরে যাবে। সেখানে পৌঁছে ধীরে ধীরে শক্তি কমবে ঝড়ের।

Advertisement

তিতলির জেরে আগামিকাল গঞ্জাম, গজপতি, পুরী, জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রাপড়া, খুরদা, নয়াগড়, কটক, জাজপুর, ভদ্রক ও বালেশ্বরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। আজও অল্প বৃষ্টি হয়েছে ওড়িশার উপকূলবর্তী কিছু এলাকায়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার রাত থেকে দক্ষিণ ওড়িশা উপকূল বরাবর ঘণ্টায় ১৪০-১৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে। তা ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটারও হতে পারে। দক্ষিণ উপকূলে ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। সমুদ্র অশান্ত থাকায় শুক্রবার পর্যন্ত ওড়িশা উপকূল এবং মধ্য ও উত্তর বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকার মৎস্যজীবীদের সাবধান করা হয়েছে।

ভারী বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কায় ওড়িশার প্রতিটি জেলায় সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। মুখ্য সচিব এ পি পাধি জানিয়েছেন, দুর্যোগে এক জনেরও যাতে প্রাণহানি না হয়, তার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য। বিশেষ ত্রাণ কমিশনার বিপি শেট্টি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে বিপজ্জনক ও নিচু এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য প্রস্তুত ৩০০টি মোটর বোট। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৬টি দল, ওড়িশার র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের ১১টি দল ও দমকল বাহিনী তৈরি রাখা হয়েছে। বিশাখাপত্তমন থেকে নৌবাহিনীর বিশেষ ডুবুরি দল চিল্কায় গিয়েছে। চিকিৎসকদের একটি দলও প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেখানে।

রেল জানায়, হাওড়া ও খড়্গপুরের দিক থেকে আসা আপ ট্রেনগুলিকে আজ বিকেল ৫টার পরে ভদ্রক থেকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। হায়দরাবাদ-বিশাখাপত্তনমের দিক থেকে আসা উত্তরমুখী ট্রেনগুলিকে সাড়ে ছ’টার পরে বিশাখাপত্তনমের দুভভড়া থেকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। পুরী থেকে পুরী-জোধপুর এক্সপ্রেস প্রায় ৫ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। পুরী-আমদাবাদ এক্সপ্রেস ছেড়েছে ৩ ঘণ্টা দেরিতে। পুরী-হাওড়া গরিব রথ এক্সপ্রেস আজ রাতের বদলে কাল ভোর ৫টায় ছাড়বে। বুধবার রাতে কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বরের উড়ান বাতিল করেছে ইন্ডিগো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন