—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ এনে ওড়িশায় নিজের কলেজে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা ছাত্রীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাখা হয়েছে ভেন্টিলেশনে। ভুবনেশ্বর এমসে ওই ছাত্রীর চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ছাত্রীর ত্বক, শ্বাসনালি-সহ শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ পুড়ে গিয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাঁকে সারা ক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ওড়িশার বালেশ্বরের এক কলেজে তাঁর বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছিলেন ওই ছাত্রী। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি। শনিবার এই নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গেও দেখা করতে যান তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যেই ক্যাম্পাসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন নির্যাতিতা। ছাত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন কলেজেরই এক ছাত্র। নির্যাতিতার গায়ের আগুন নেভাতে গিয়ে তিনিও দগ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পরে তড়িঘড়ি দু’জনকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভুবনেশ্বর এমসে স্থানান্তর করা হয়।
নির্যাতিতার চিকিৎসার জন্য ১২ জন চিকিৎসকের একটি দল গঠন করেছে এমস। হাসপাতালের কার্যনির্বাহী ডিরেক্টর আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীর অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। তাঁকে একটি বিশেষ আইসিইউ ওয়ার্ডে ভেন্টিলিটরে রাখা হয়েছে। তাঁর শরীরের প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ অংশ পুড়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁর কিডনিও। ভর্তির পর থেকে এখনও পর্যন্ত ওই ছাত্রীর শারীরিক অবস্থার উন্নতির কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।’’ মেডিক্যাল বোর্ডের এক সদস্য বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীর শরীরে টিউব লাগানো রয়েছে।’’
বালেশ্বর কলেজের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই নড়েচড়ে বসেছে ওড়িশা সরকার। আহত দুই পড়ুয়ার চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে গঠন করা হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। অভিযুক্ত অধ্যাপককে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাসপেন্ড করা হয়েছে ওই কলেজের প্রিন্সিপালকেও। ওড়িশার শিক্ষামন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ রবিবার বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা কঠোর পদক্ষেপ করেছি।’’