ফাইল চিত্র।
মেট্রোয় বসা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। কথা কাটাকাটির মধ্যেই মেট্রোযাত্রীর ব্যাগ থেকে বেরিয়ে এল কুড়ুল! সহযাত্রীকে সেই কুড়ুল দিয়ে আক্রমণ শানানোর চেষ্টাও করলেন এক প্রৌঢ়া। যদিও অঘটন ঘটার আগেই অন্য এক সহযাত্রী সেই কুড়ুল কেড়ে নেন। হাড় হিম করে দেওয়া এই ঘটনা বুধবার ঘটেছে দিল্লিতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মেট্রোর আসন নিয়ে দুই মহিলা যাত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি চলছিল। আচমকাই ব্যাগ থেকে কুড়ুল বের করে পাশের মহিলা যাত্রীর দিকে তা উঁচিয়ে ধরেন এক প্রৌঢ়া। চলন্ত মেট্রোর মধ্যে এমন দৃশ্য দেখে হকচকিয়ে যান সকলে। কোনওমতে কুড়ুলটিকে এক যাত্রী কেড়ে নেওয়ায় এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান ওই মহিলা। তবে অস্ত্র নিয়ে কী ভাবে ওই প্রৌঢ়া মেট্রোয় ঢুকে পড়লেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি নিয়েও। বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়েই দেখছে সিআইএসএফ। ঘটনায় এক জওয়ানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার পূর্ণ রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
দিল্লি মেট্রো জানিয়েছে, ওই দিন ৬৫ বছরের এক প্রৌঢ়া হৌজ খাস মেট্রো স্টেশনে আসেন। তিনি গুরুগ্রামের বাসিন্দা। তাঁর কাছে একটি ব্যাগ ছিল। ব্যাগ স্ক্যান করার সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআইএসএফ জওয়ান ব্যাগের মধ্যে ওই কুড়ুলটি দেখতে পান। ওটা নিয়ে যে মেট্রোতে ঢোকা যায় না তা তাঁকে জানানো হয়। এর পর কান্নাকাটি শুরু করেন ওই প্রৌঢ়া। শেষ পর্যন্ত তাঁকে কুড়ুল নিয়ে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। ওই প্রৌঢ়া জানিয়েছিলেন, কুড়ুলটি তাঁর রোজগারের উপায়। তাতে কারও কোনও রকম ক্ষতি হবে না।
কিন্তু, পরে সম্পূর্ণ উল্টো ঘটনা ঘটে। মেট্রোয় মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনে বসতে যান ওই প্রৌঢ়া। ঠিক সেই সময়েই সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আর এক মহিলা সেই সিটে বসে পড়েন। এ নিয়েই দু’জনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মেট্রো তখন সুলতানপুর স্টেশনে। বেশ কিছু ক্ষণ কথা কাটাকাটি চলার পর ওই প্রৌঢ়াকে অন্য আসনে গিয়ে বসতে বলেন বসে থাকা মহিলা। তাতে আরও রেগে যান তিনি। ব্যাগ থেকে কুড়ুলটি বের করে সোজা তাঁর উদ্দেশে চালিয়ে দেন। অন্য সহযাত্রীদের জন্য এ যাত্রায় কুড়ুলের কোপ থেকে রেহাই পান আক্রান্ত মহিলা। পরের স্টেশনেই ওই প্রৌঢ়াকে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের পর তখনকার মতো তাঁকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় কুড়ুলটিকে। দিল্লি মেট্রোর নিরাপত্তা কতটা বেহাল, এ ঘটনা তা আরও একবার দেখিয়ে দিল। গত বছরই দেশি পিস্তল নিয়ে মেট্রো স্টেশনের ভিতরে আত্মহত্যা করেছিলেন এক ব্যক্তি। তারও কয়েক মাস আগে ধারালো ছুরি দিয়ে এক মহিলাকে খুন করেছিল এক জন। বারে বারেই যাত্রী সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে আগ্রহী হওয়ার কথা বলেছেন দিল্লি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যাত্রী নিরাপত্তার উপরে আরও জোর দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি স্টেশনে স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির আসলে কোনও উন্নতিই হয়নি। সব যে এক রকমই আছে এই ঘটনা তা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
আরও পড়ুন: নির্ভয়ার স্মৃতি উসকে ফের গাড়িতে তুলে ধর্ষণ দিল্লিতে