কৃষ্ণা পুনিয়া। —ফাইল চিত্র।
ডিসকাসের ময়দানে দেশকে সম্মান এনে দিয়েছেন বহু বার। এ বার দুই কিশোরীর সম্মান বাঁচিয়ে ফের এক বার শিরোনামে অলিম্পিয়ান কৃষ্ণা পুনিয়া। এমনকী, বলিউডি ধাঁচে পিছু ধাওয়া করে দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করে পুলিশে তুলে দিলেন তিনি।
বছরের প্রথম দিন বিকেল ৪টে নাগাদ স্বামী বীরেন্দ্র পুনিয়ার সঙ্গে বেড়াতে বেরিয়েছিলেন কৃষ্ণা। রাজস্থানের চুরু জেলা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দেখেন, তিন মোটরবাইকআরোহী ওই কিশোরীদের উত্যক্ত করছে। কাছে গিয়ে প্রথমে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন কৃষ্ণা। কিন্ত, তাঁর কথায় কোনও কাজ হয়নি। ফের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে ওই তিন জন। দমে না গিয়ে তাদের পিছু ধাওয়া করেন কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয়ী কৃষ্ণা। গাড়িতে প্রায় ৫০ মিটার তাড়া করার পর হরিয়ানা সীমানার কাছাকাছি ওই তিন জনকে ঘিরে ফেলেন তিনি। এক দুষ্কৃতীকে টেনে মোটরবাইকের পিছন থেকে মাটিতে ফেলে দেন দীর্ঘদেহী কৃষ্ণা। ঘটনা দেখে সেখানে এলাকার বাসিন্দাদের ভিড় জমে যায়। এর পর পুলিশে ফোন করে খবর দেন কৃষ্ণা। প্রথম বার সাড়া না পেয়ে ফের ফোন করেন তিনি। এর পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশর্কমীরা ওই তিন জনকে আটক করে। ওই দুই কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে থানায়ও যান কৃষ্ণা। অভিযোগ দায়ের করতে তাদের সাহায্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন
মিলল যৌন হেনস্থার নতুন ফুটেজ, চাপের মুখে তদন্ত শুরু কর্নাটক সরকারের
কিন্তু, কেন ওই দুষ্কৃতীদের পিছু ধাওয়া করলেন কৃষ্ণা? এশিয়াডে ব্রোঞ্জ জয়ী ৩৯ বছরের কৃষ্ণা বলেন, “ওই মেয়েদের হেনস্থা দেখে মনে হল, ওরা আমার মেয়েও তো হতে পারত। এর পরেই আর নিজেকে সামলাতে পারিনি। ওদের তাড়া করি।”
তবে গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কৃষ্ণা। তিনি বলেন, “দু’বার ফোন করার পর তবে সেখানে পুলিশ আসে। অথচ এখান থেকে মাত্র দু’মিনিট দূরেই থানা।” তাঁর প্রশ্ন, “ঘটনাস্থলে এত দেরিতে পৌঁছলে পুলিশ মহিলাদের নিরাপত্তাই বা নিশ্চিত করবে কী ভাবে?”
২০১১ সালের পদ্মশ্রী প্রাপক কৃষ্ণা বলেন, “আমাদের সমাজের সমস্যা হল, একটি মেয়েকে হেনস্থা হতে দেখেও তা বিরুদ্ধে খুব কম মানুষই প্রতিবাদে সরব হন। বরং চুপ করে থাকাটাই পছন্দ করেন তাঁরা।”